সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বললেই মামলা, না হয় জঙ্গি: মির্জা ফখরুল

DSC_2518

বর্তমান সরকারের কোনও সমালোচনা করা যায় না মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,‘মানুষ আজ  সত্য কথা বলতে পারে না। বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলা যায় না। সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বললেই মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। না হয়, জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত বলা হয়। দলের ২০-২৫ জন লোক নিয়ে মিটিংয়ে বসলেও নাশকতার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলা হবে। তারপর ধরে বলবে টাকা দাও, না হয় জেলে যাও, এই হলো বর্তমান বাংলাদেশে অবস্থা।’ শনিবার বিকেল গাইবান্ধা পৌর পার্কে জেলা বিএনপির কাউন্সিল ও ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৪ সালের মতো আর কোনও নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। বিগত ইউপি নির্বাচন, পৌর নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনে ভোট ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। জনগণকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। জনগণ ভোট দিতে না গেলেও ফলাফল ঘোষণা করে, সরকার গঠন করা হয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ কে এম বদরুল হুদার নেতৃত্বে দেশে কোনও নির্বাচনই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে না। এই নির্বাচন কমিশন শুধু আওয়ামী লীগের প্রেসক্রিপশনই বাস্তবায়ন করবেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জানি দেশ থেকে ভয়াবহ জঙ্গিবাদকে প্রতিরোধ করতে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন। সেজন্য আমরা জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেটা নাকোচ করে দিয়েছেন। বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর দেশে এতো হামলা, মামলা, নির্যাতন, গুম ও খুনের পর তারা দমে যায়নি। মিথ্যা মামলা দিয়ে খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কিন্তু এদেশের জনগণ তা কিছুতেই মেনে নেবে না’।

 প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে গিয়েই তাদের নানা সুবিধা দিয়ে এসেছেন মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘আমরা চাই অবিলম্বে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি বাস্তবায়ন করা হোক। ভারতের সঙ্গে আমাদের যে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে, ওই নদীগুলোর পানির ন্যায্য হিস্যা মানুষ চায়। সীমান্তে বাংলাদেশের মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে, আমরা চাই এর সুষ্ঠু বিচার করা হোক।’

জেলা বিএনপি সভাপতি মো. আনিসুজ্জামান খাঁন বাবুর সভাপতিত্বে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপ-মন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু। কাউন্সিলে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান মণ্ডল, জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাহেরুল ইসলাম রঞ্জু প্রমুখ।

দীর্ঘ ৭ বছর পর অনুষ্ঠিত এই জেলা কাউন্সিল ও সম্মেলনে জেলার সাতটি উপজেলা ও ৩টি পৌর এলাকার বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কাউন্সিলরা গোপন ব্যালটে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদের জন্য পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেন। এসময় ১১৪৮ জন কাউন্সিলর ভোট দেন।

সভাপতি পদে সদ্য বিলুপ্ত জেলা কমিটির সভাপতি আনিসুজ্জামান খান বাবু, ডা. মাইনুল হাসান সাদিক ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মিজানুর রহমান, মাহমুদুন্নবী টিটুল, অ্যাড. জিএম মোসাদ্দেক, কামরুল হাসান সেলিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আতিক হাসান রনি, আনিছুর রহমান নাদিম, মোশারফ হোসেন বাবু, এসএম হুনান হক্কানী, অ্যাড. মঞ্জুর মোর্শেদ বাবু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বিকেল ৬টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গোপন ব্যালটের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল গণনা করা হচ্ছিল।

/জেবি/

আরও পড়তে পারেন: ‘জঙ্গি হামলা প্রতিরোধে দেশের বিদ্যুৎ স্টেশনগুলোতে পর্যাপ্ত সিকিউরিটি রয়েছে’