টাকা না দিলে এমপির হাতে উদ্বোধন নয়!

Thakurgaon Biddut Pic-1ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রায়পুর ঝাড়পাড়া এলাকায় সরকারি অর্থায়নে পল্লী বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু এমপির মাধ্যমে বিদ্যুৎ লাইন উদ্বোধনের জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য সুরেন চন্দ্রকে ১ হাজার করে টাকা না দিলে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, সদর উপজেলা রায়পুর ইউনিয়নের ঝাড়পাড়া এলাকার পল্লী বিদ্যুতের মিটার জামানতের জন্য ৬৫০ টাকা প্রয়োজন হলেও ৯৪ জন গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য সুরেন ও পল্লী বিদ্যুতের ওয়ারিং মিস্ত্রি মশিউর রহমান মিটার বাবদ ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা করে নেয়। দীর্ঘদিন টালবাহানার পর ওইসব গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ওয়ারিং ও পোল নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ঠাকুরগাঁও-১ আসনের এমপি সাবেক পানি সম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ লাইন উদ্বোধনের কথা বলে আবারও গ্রাহক প্রতি ১ হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। টাকা না দিলে লাইন উদ্বোধন করা হবে না বলে হুমকীও দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিদ্যুতের সংযোগে এলাকার মানুষ আশার আলো দেখলেও বতর্মানে হতাশায় ভুগছেন তারা।

সদর উপজেলার রায়পুর ঝাড়পাড়া এলাকায় শবিন্দ্রনাথ, আশারু বর্মণ, নুরুল ই্সলাম, নুরুল আমিন বলেন, ২০১১ সাল থেকে বিদ্যুতের জন্য টাকা দিচ্ছি, এখন লাইন নির্মাণ হয়েছে। সুরেন মেম্বারের সঙ্গে আগে ৩ হাজার করে টাকা চুক্তি হয়েছিল । সেই টাকা আমরা সবাই দিয়েছি। যারা টাকা কম দিয়েছে তাদের ওয়ারিং করা হয়নি। আবার এখন এমপির উদ্বোধন খরচের জন্য প্রতিটি গ্রাহকের কাছে সুরেন মেম্বার ১ হাজার করে টাকা চাইছে ।

Thakurgaon Biddut Pic-3শ্রী মতি রাণী জানান, আর কত টাকা হলে আমরা বিদ্যুৎ পাবো জানি না। উদ্বোধনের জন্য নাকি ১ হাজার টাকা লাগবে। সরকার সব সুবিধা দিচ্ছে কিন্তু স্থানীয় মেম্বার টাকার জন্য আমাদের লাইন উদ্বোধন করছে না।

এ বিষয়ে ঝাড়পাড়া এলাকার বর্তমান ইউপি সদস্য সুরেন বলেন, ‘৯৪টি মিটারের জন্য লাইন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। গ্রাহকদের কাছে ৫০০ টাকা করে নিয়ে বিদ্যুৎ লাইন এমপির হাতে উদ্বোধন করবো। টাকা না দিলে কীভাবে উদ্বোধন হবে?’

গ্রাহক প্রতি ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা তোলার অভিযোগে সুরেন বলেন, ‘চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম পল্লী বিদ্যুতের ওয়ারিং ম্যান মশিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে দিয়েছেন। আমি গ্রাহকদের টাকা তুলে মশিউরকে দিয়েছি। এ ছাড়া পল্লী বিদ্যুতের এলাকা পরিচালক রেজাউল করিম রাজু চৌধুরিকে কিছু সম্মানি দিতে হয়েছে।’

রায়পুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান জানান, সরকার প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছে। ইউপি সদস্য যদি উদ্বোধনের কথা বলে টাকা চেয়ে থাকে তাহলে বিয়ষটি অন্যায়।

ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহা-বব্যস্থাপক ইনছের আলী বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ শেষ হয়েছে। আমরা এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছি।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, ‘এ সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

/এআর/