হিলি বন্দরে আটকা পড়েছে তিন শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক

04উত্তরবঙ্গ ট্রাক, ট্যাংকলরি, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপ মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ৭ দফা দাবিতে ডাকা দুদিনের কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিনেও পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়েছে হিলি স্থলবন্দরের কার্যক্রম। কর্মবিরতির কারণে বন্দর থেকে দেশের অভ্যন্তরে পণ্য পরিবহন কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এতে করে বন্দরের অভ্যন্তরে পেঁয়াজ, চালসহ তিন শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে। তবে বন্দর দিয়ে দুদেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রফতানি কার্যক্রম চালু রয়েছে। এর ফলে বন্দরে পণ্য জটের আশঙ্কা রয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের।

পরিবহন মালিক ও শ্রমিকের কর্মবিরতির কারনে রবিবার (২১ মে) সকাল থেকেই হিলি থেকে সব রুটে পণ্য পরিবহন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সেই সঙ্গে ট্রাক চালাতে না পারায় অনেক পণ্যবাহী ট্রাককে প্রধান সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এসব পরিবহনের চালক ও সহকারীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি মো.হারুন উর রশীদ হারুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পরিবহন মালিক শ্রমিকদের ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতি চলার কারণে পণ্য পরিবহনে আমরা কোনও ট্রাক পাচ্ছি না। ট্রাক না পাওয়ায় আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে বিপাকে পড়েছি। দেশের কোথাও এসব পণ্য সরবরাহ করতে পারছি না। এমনকি বন্দর থেকে আমাদের নিজস্ব গুদামেও নিতে পারছি না। এতে করে বন্দরের ভেতরে বেশ পরিমাণ পেঁয়াজসহ অন্যান্য পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়ে আছে। প্রচণ্ড গরমের কারনে আটকে পড়া এসব পেঁয়াজে পচন ধরতে শুরু করেছে। এতে করে এসব পণ্য নষ্ট হয়ে আমরা আমদানিকারকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
এছাড়াও ভারতের অভ্যন্তরে পেঁয়াজসহ বেশ কিছু পরিমাণ গাড়ি আটকা পড়ে রয়েছে। গরমের কারণে এসব পণ্য নিয়ে আমরা এক ধরনের শঙ্কায় রয়েছি। এর ওপর আবারও পরিবহন মালিক শ্রমিকরা তাদের কর্মবিরতি আরও ২৪ ঘণ্টা বাড়িয়েছে। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করছি দ্রুত বিষয়টির সমাধান করা হোক।’

হিলি স্থলবন্দর পরিচালনাকারী পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ বিষয়ক কর্মকর্তা সোহরাব হোসেব প্রতাব মল্লিক বলেন, ‘বন্দর দিয়ে দুদেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রফতানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। তবে পরিবহন মালিক শ্রমিকের কর্মবিরতির কারণে বাংলা ট্রাক না পাওয়ায় রবিবার থেকে বন্দরের ভেতরে পণ্য লোড-আনলোড কার্যক্রম পরিচালনা করা যাচ্ছে না। এর ফলে বন্দরের ভেতরে ৫০ ট্রাক পেঁয়াজ, ১৫০ ট্রাক চালসহ অন্যান্য পণ্য মিলিয়ে ৩১১টি পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়ে আছে। আজকেও এসব গাড়িগুলো থেকে পণ্য খালাস করা না হয় তাহলে পেঁয়াজগুলোতে পচন ধরবে।

এর ওপর আজকেও বন্দরে ভারত থেকে পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করছে। এর ফলে বন্দরের ভেতরে পণ্যজট সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্দরের ভেতরে লোড-আনলোড বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা যেমন বেকার হয়ে পড়েছেন, তেমনি সরকার রাজস্ব পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বন্দর কর্তৃপক্ষও তাদের পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, মহাসড়কে চাঁদাবাজি ও পুলিশি হয়রানি বন্ধ, ভ্যাট প্রত্যাহারসহ ৭ দফা দাবি আদায়ের লক্ষে এই কর্মবিরতির ডাক দেয় উত্তরবঙ্গ ট্রাক ও ট্যাংকলরি, কাভার্ডভ্যান, পিকআপ মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

/এআর/