‘শেখের বেটি নতুন ঘর দিছে, হামাক আর কষ্ট করি থাকা নাগব্যার নয়’

আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় তৈরি করা ঘরবৃষ্টি এলেই বাক প্রতিবন্ধী ময়নুদ্দিনের (৪৮) ঘরের চাল দিয়ে পানি পড়ে বিছানা ভিজে যেত। আবার শীত এলেই হিমেল হাওয়া ঘরের বেড়া দিয়ে ঢুকে রাতের উষ্ণ ঘুম কেড়ে নিত। কিন্তু কথা বলতে না পারায় কষ্টের অনুভূতি কাউকে ঠিকমত জানাতেও পারতেন না ময়নুদ্দি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর কার্যক্রমে ময়নুদ্দিনের সেই জীর্ণ ঘর এখন কংক্রিট আর টিনের বাংলোয় রূপ নিয়েছে, আছে বারান্দাও। বৃষ্টি কিংবা শীতে আর কষ্ট করতে হবে না বাক প্রতিবন্ধী ময়নুদ্দিকে।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নন্দির কুটি গ্রামের ময়নুদ্দির মতো উপজেলার ১৮৯টি গৃহহীন পরিবারকে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি পরিবারে এখন স্বস্তির হাসি।

উপজেলা পরিষদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে যাদের জমি আছে ঘর নেই এমন ১৮৯টি পরিবারকে এক লাখ টাকা ব্যয়ে গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। গৃহহীন এমন আরও পরিবারের তালিকা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।

প্রকল্পের ঘর পাওয়া জুলেখা বেগম
এদিকে জীর্ণ কুঠির থেকে টিনের ঘর আর পাকা মেঝে পেয়ে আনন্দে ভাসছে ঘর পাওয়া পরিবারগুলো। তাদের চোখে মুখে এখন কেবলই খুশি। সরকারের এমন উদ্যোগে কৃতজ্ঞতার সুর তাদের কণ্ঠে।

নন্দি কুটি গ্রামের মজিরন বেগম, জুলেখা বেগম, নূরজামাল, এবং আলেয়া খাতুনসহ প্রকল্পের আওতায় ঘর পাওয়া সবাই আনন্দিত। তারা জানান, এখন আর তাদেরকে ঘরের জন্য কষ্ট করতে হবে না, দিন শেষে আর ঘুমানোর জন্য কোনও দুশ্চিন্তা করতে হবে না। ঘর দেওয়ায় তারা প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানান।

প্রকল্পের ঘর পাওয়া জুলেখা বেগম বলেন, ‘শেখের বেটি নতুন ঘর দিছে, চাল দিয়া আর পানি পড়বার নয়, হামাক আর কষ্ট করি থাকা নাগব্যার নয়। আল্লায় তার ভাল করুক।’

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও বলেন,‘প্রাক্কলন অনুযায়ী এক কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে এসব গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। সরকারের এমন উদ্যোগে গৃহহীনদের কষ্ট অনেকাংশে লাঘব হয়েছে।’

আগামীতে এই প্রকল্পের আওতায় যাচাই করে আরও গৃহহীনদের তালিকা পাঠানো হবে বলে জানান এই নির্বাহী কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন:

ত্রাণের জন্য অন্তহীন অপেক্ষা