মহিমাগঞ্জ সুগার মিলের পরিত্যক্ত ভবনে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস

মহিমাগঞ্জ সুগার মিলের আবাসিক ভবনরংপুর সুগার মিলের আওতাধীন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ সুগার মিলের আবাসিক ভবনগুলোর এখন জীর্ণশীর্ণ দশা। সরেজমিনে দেখা গেছে, দীর্ঘদিনের ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে গেছে। দেয়ালে ফাটল ধরেছে। এছাড়াও কাঠ ও ইটে লেগে আছে শ্যাওলা। ১৩ বছর আগে ভবনগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি মিল কর্তৃপক্ষ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব ভবনেই বাস করছেন মিলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সুগার মিল সংশ্লিষ্টরা জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোতে সপরিবারে বসবাস করছেন তারা। এছাড়া পরিত্যক্ত থাকার সুযোগ নিয়ে শ্রমিকদের ভবনগুলো দখল করে স্থানীয়রা ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন তারা। 

মহিমাগঞ্জ সুগার মিলের আবাসিক ভবনরংপুর সুগার মিল সূত্রে জানা যায়, মহিমাগঞ্জ সুগার মিলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের আবাসিক সুবিধার জন্য ১৯৫৭ সালে বেশ কিছু একতলা ও দ্বিতল ভবন এবং টিনসেড ঘর নির্মাণ করা হয়। ১৯৫৮ সাল থেকে মিলের কর্মকর্তারা পরিবার নিয়ে থাকতে শুরু করেন। ২০০৪ সালে সুগার মিলের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হলে  ভবনগুলোও পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর সুগার মিল আবারও চালু করা হয়। কিন্তু ভবনগুলো সংস্কার না করায়  ঝুঁকি নিয়ে এসব ভবনে আবারও বসবাস শুরু করেন মিলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসবাসকারী সুগার মিলের ডিজিএম রেজাউল করীম বলেন, ‘একটি দ্বিতল ভবনে পরিবার নিয়ে থাকি। ভবনটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। কিন্তু আর্থিক দিক বিবেচনা করে আমাকে এখানে থাকতে হচ্ছে।’

মহিমাগঞ্জ সুগার মিলের আবাসিক ভবনইলেকট্রনিক্স ইনিঞ্জনিয়ার নুরুল ইসলাম বলেন, ‘জরাজীর্ণ এসব ভবনে বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে কোনও রকমে বসবাস করছি। তবে ঝড়-বৃষ্টির সময় ভবন ভেঙে পড়ার ভয়ে আতঙ্কে থাকি। কিন্তু কোনও উপায় না থাকায় বাধ্য হয়েই এখানে বসবাস করতে হচ্ছে আমাদের। ’

মিলের শ্রমিক জাহিদুল ইসলাম, রিয়াজুল ইসলাম ও মফিজ উদ্দিনসহ ভবনগুলোতে বসবাস করা অন্যান্যরা জানান, এসব বাসায় ভাড়া ছাড়াই থাকছেন তারা। এতে করে সরকার প্রতি বছর রাজস্ব হারাচ্ছে। তারা প্রতি মাসে ভাড়া দিয়ে থাকতে চান। দ্রুত ভবনগুলো নতুনভাবে নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন পরিত্যক্ত ভবনগুলোর বাসিন্দারা।

মহিমাগঞ্জ সুগার মিলের আবাসিক ভবনমহিমাগঞ্জ সুগার মিলের এমডি ইউসুফ আলী সিকদার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কথা  স্বীকার করে বলেন, ‘সুগার মিলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসবাসের উপযোগী নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট বরাদ্দ চেয়ে আবেদন  করা হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে ভবন  নির্মাণ করা হবে।’