তারা আরও জানান, ওই সমাবেশ থেকে ১০ নভেম্বর আবারও মানববন্ধন ও সমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়। সেই সমাবেশ সফল করতে পাগলাপীর ও পাশের খলেয়া ইউনিয়ন সদর উপজেলার মমিনপুর ও তারাগঞ্জ উপজেলার হাড়িয়াল কুঠিসহ আশেপাশের সব মসজিদে জুমার নামাজের সময় ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে জেহাদ করার জন্য ফতোয়া দেওয়া হয় এবং সবাইকে মিছিল সমাবেশে যোগদানেরও আহ্বান জানানো হয়।
বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ সকাল থেকে মানববন্ধনের স্থান সলেয়াসার এলাকায় অবস্থান নেয়। সেখানে জুমার নামাজের পর মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের জেলা সভাপতি বিএনপি নেতা এনামুল হক মাজেদী , মাসুদ রানা , ডাঙ্গিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম সহবেশ কয়েকজন জামায়াত শিবির নেতা। তবে পুলিশ তাদের বেশিক্ষণ মানববন্ধন করতে না দিলেও আশপাশের এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষের ঠাকুরপাড়া মহল্লার দিকে আসতে থাকে। তাদেরকে ঠেকানোর কোনও প্রস্তুতি ছিল না। ১৫/২০ হাজার মানুষ লাঠি হাতে ঠাকুরপাড়া হামলা করতে আসায় এত বেশি মানুষের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নিতে পারেনি পুলিশ। তবে সকাল থেকেই ঘটনাস্থলের আশেপাশে ১৪৪ ধারা জারি করা হলে আর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিলে এ তাণ্ডবের ঘটনা ঘটতো না। এটা পুলিশের চরম ব্যর্থতা বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
পরিকল্পনা ছিল- সলেয়াসা এলাকায় এক পক্ষ মানববন্ধন করবে অন্যদিকে মমিনপুর, হাড়িয়াল কুঠি আর খলেয়ার আশেপাশের লোকজন সরাসরি ঠাকুরবাড়ি গ্রামে হামলা চালাবে। ঘটেছেও তাই। তারা হামলা চালিয়ে ৩০টি বাড়িতে আগুন দিয়েছে মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস, ও গুলিবর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আনার চেষ্টা করলেও কোনও কাজ হয়নি। গুলিবিদ্ধ হয় ১০ জন। এদের মধ্যে হামিদুল নামে একজন নিহত হন। এছাড়া এখনও মৃত্যুর সঙ্গে আইসিইউতে পাঞ্জা লড়ছেন মাহবুব নামে এক যুবক।
এদিকে, স্বয়ং পুলিশের আইজিপি মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পাশের একটি মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশে এ তাণ্ডবের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বক্তব্য দিয়েছেন।
রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন জানান, মামলার এজাহার নামীয় দুই আসামি জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলাম ও তার ছেলে তারেককে মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার করার অভিযান চলছে। অচিরেই সব আসামি ধরা পড়বে বলে জানান তিনি।