হিলি স্থলবন্দরের অভ্যন্তরে ব্যাংকের বুথ না থাকায় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত

হিলি স্থলবন্দরদিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে অভ্যন্তরে ব্যাংকের কোনও বুথ না থাকায় বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। দু’দেশের আমদানি-রফতানিকৃত পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক, সিঅ্যান্ডএফ’র এজেন্টদের ভ্যাট ও এআইটির টাকা এবং বন্দরের চার্জ পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু বন্দরের ভেতরে ব্যাংকের কোনও বুথ না থাকায় এসব শুল্ক বাইরে পরিশোধ করতে গিয়ে বাড়তি সময় লাগছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত স্থলবন্দরগুলোতে শুল্ক পরিশোধের জন্য ওই সব বন্দরের অভ্যন্তরে ব্যাংকের বুথ থাকলেও হিলি স্থলবন্দরের অভ্যন্তরে এখনও কোনও বুথ স্থাপন করা হয়নি।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি মো.হারুন উর রশীদ হারুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভারত থেকে আমদানিকৃত এবং বাংলাদেশ থেকে রফতানিকৃত পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক ব্যাংকে পরিশোধ করার পরেই সেই চালানের কপি কাস্টমসে জমা দেওয়ার পর সব প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে বন্দর থেকে পণ্য ছাড় দেওয়া হয়। কিন্তু শুল্ক পরিশোধের জন্য বন্দরের অভ্যন্তরে ব্যাংকের কোনও বুথ না থাকায় বাইরে গিয়ে সোনালী ব্যাংকের সাধারণ শাখায় শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমাদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। যার ফলে বন্দর থেকে সঠিক সময়ে পণ্য খালাস করতে বাড়তি সময় লাগে।’

হিলি স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মো.শাহিনুর রেজা শাহীন বলেন, ‘আমদানি-রফতানিকৃত পণ্য বন্দর থেকে খালাসের জন্য আমদানিকারকদের পক্ষে কাস্টমস ও বন্দরের সব কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের করতে হয়। এছাড়া পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক ছাড়াও সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টকে ওই সব কাজ সম্পাদনের জন্য সিঅ্যান্ডএফ ভ্যাট ও সিঅ্যান্ডএফ এআইটির টাকা চালান মূলে ব্যাংকে জমা দিতে হয়। কিন্তু বন্দরের ভেতরে ব্যাংকের বুথ না থাকার কারণে সেই কার্যক্রম ব্যাহত হয়। বিশেষ করে অনেক সময় কাজ করতে করতে রাত হয়ে গেলে সেদিন আরও বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এছাড়াও সব প্রক্রিয়া শেষে বন্দর থেকে পণ্য ছাড় নেওয়ার জন্য বন্দরের চার্জ পরিশোধ করতে হয় ব্যাংকে গিয়ে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। এছাড়াও একই ব্যাংকে সব ধরনের কার্যক্রমের পাশাপাশি শুল্ক নেওয়ার কার্যক্রম চালু থাকার কারণে আমাদের অনেক সময় ব্যায় করতে হয়। অন্যান্য স্থলবন্দরের মতো হিলি স্থলবন্দরের ভেতরে যদি ব্যাংকের বুথ দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে এসব ভোগান্তি দূর হবে, পাশাপাশি বন্দরের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে। সেইসঙ্গে অন্যান্য বন্দরের মতো হিলি স্থলবন্দরকেও ২৪ ঘণ্টা কার্যক্রম চালু রাখা যাবে।’

হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার মো.মশিয়ার রহমান মণ্ডল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বন্দরের অভ্যন্তরে ব্যাংকের বুথের জন্য সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও আমদানি-রফতানিকারকরা আমাদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা বন্দরের ভেতরে বুথ স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। আশা করছি শিগগিরই এ বিষয়ে একটি সিন্ধান্ত আসবে। এটি হলে অন্যান্য স্থলবন্দরের মতো হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা সহজ হবে।’

সম্প্রতি হিলি স্থল পরিদর্শনে আসেন কাস্টমস এক্সসাইট ও ভ্যাট রংপুর কমিশনারেটের কমিশনার মোহাম্মদ আহসানুল হক। পরে তিনি বন্দরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বন্দরের অভ্যন্তরে ব্যাংকের বুথ খোলার বিষয়ে ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে চিঠি দেওয়ার জন্য বলেছেন। সেই সঙ্গে বিষয়টি তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরকে জানাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন যাতে করে অতি দ্রুত হিলি স্থলবন্দরের অভ্যন্তরে ব্যাংকের বুথ স্থাপন করা হয়।