তিস্তা সেচ ক্যানেল থেকে বছরে ৫ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব

তিস্তা ক্যানেলডালিয়া তিস্তা সেচ ক্যানেলে মাছ, হাঁস ও মুরগি চাষ করে বছরে ৫-৬ কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। মৎস্য চাষের সবুজ বিপ্লব ঘটতে পারে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের দুই হাজার কিলোমিটার সেচ ক্যানেলে।

কারিগরি দক্ষতা ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ক্যানেলটিকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে মৎস্যজীবী ও এলাকাবাসী।

নীলফামারী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মাছ চাষের জন্য এটি একটি আদর্শ ও উপযোগী ক্যানেল। মাছের বিচরণ, খাদ্য আহরণ ও প্রজননের অপার সম্ভবনা রয়েছে এই ক্যানেলে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তিস্তা প্রকল্পটি রংপুর,দিনাজপুর,নীলফামারী অঞ্চলের একটি সম্ভাবনাময় প্রজেক্ট। তিস্তা ব্যারাজ থেকে দুই হাজার কিলোমিটার সেচ ক্যানেল চলে গেছে দিনাজপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায়। স্বচ্ছ ও মিঠা পানির এই জলাশয়ে প্রচুর দেশি প্রজাতির মাছ চাষ করা যেতে পারে। ওই ক্যানেলে এক কিলোমিটার করে এলাকা ভিত্তিক ইজারা দেওয়া হলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করবে।

এছাড়া, এলাকাভিত্তিক কর্মসংস্থান গড়ে উঠবে। এতে করে এ অঞ্চলের মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবে। আরও এক ধাপ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

তিস্তা ক্যানেলজেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রতি কিলোমিটারে যদি সমবায়ের ভিত্তিতে ক্যানেল তীরবর্তী স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করে মাছ চাষ করা যায় সেক্ষেত্রে একেকটি প্রকল্পে কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই হাজার টন মাছ পাওয়া যাবে। যার বাজার মূল্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা।

সমবায় ভিত্তিতে এ প্রকল্পটি প্রণয়নের একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য বিশেষজ্ঞরা।

ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ডালিয়া পয়েন্টের তিস্তা ব্যারাজ থেকে নীলফামারী, রংপুর, দিনাজপুর হয়ে সেচ ক্যানেলটি চলে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। বর্ষা মৌসুমে পানিতে ভরপুর থাকে ক্যানেলের বিভিন্ন শাখা ও উপ-শাখাগুলো। আর এসময় ক্যানেলগুলোতে পানি ধরে রেখে স্বচ্ছ ও মিঠা পানির এই জলাধারে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ হতে পারে। একইসঙ্গে মুরগি ও হাঁস চাষ করে উভয় খাত থেকে প্রচুর অর্থ আয় করা সম্ভব হবে।

তিস্তা ক্যানেলমৎস্য কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, তিস্তা সেচ ক্যানেলে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ,হাঁস ও মুরগি চাষের একটি প্রস্তাবনা এরই মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। আশা করি, উচ্চ মহলের সুনজর পেলে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দেশীয় অর্থনীতিতে বিশাল প্রভাব পড়বে । এই এলাকার মানুষের জন্য আয়ের উৎস হিসেবে এই ক্যানেলটি (জলাধার) ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে মাছের পাশপাশি হাঁস, মুরগির খামার করা হলে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।