অস্ত্রের মুখে শ্বশুর বাড়ি থেকে স্ত্রীকে অপহরণের সময় জামাই আটক

কুড়িগ্রামকুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় শ্বশুর বাড়ি থেকে অস্ত্রের মুখে স্ত্রীকে অপহরণ করার সময় জনতার ধাওয়ায় আটক হয়েছে জামাই দুলাল হোসেন ও তার এক সহযোগী। এ সময় অপহরণ করতে আসা দুলালের আরও ছয় সহযোগী পালিয়ে যায়। দেশীয় অস্ত্রসহ আটক ওই দুইজনকে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা। বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে সন্ত্রাসীদের আঘাতে আহত গৃহবধূ মৌসুমী খাতুনকে ভুরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানকার আবাসিক চিকিৎসক ডা.এএসএম সায়েম জানান, মৌসুমীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে,তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাকে দুই-তিনদিন হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হবে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের গছিডাঙ্গা মাস্টারপাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেনের মেয়ে মৌসুমী খাতুনের সঙ্গে নাগেশ্বরী উপজেলার বলদিটারী গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে দুলাল হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই নানা অজুহাতে মৌসুমীকে শারীরিক নির্যাতন করতেন দুলাল। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মৌসুমী খাতুন স্বামীর বাড়ি থেকে তার বাবার বাড়িতে চলে আসে।

দুলাল কয়েকবার ফেরত আনতে গেলেও মৌসুমী তার সংসারে যেতে রাজি হচ্ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সকালে দুলাল হোসেন তার সাত সহযোগীসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মৌসুমীকে অপহরণ করার উদ্দেশে মাস্টারপাড়া গ্রামে মৌসুমীর বাবার বাড়িতে হামলা করে। তারা মৌসুমীকে আঘাত করে জোর করে মৌসুমীকে তুলে নিয়ে যেতে চাইলে তার চিৎকারে গ্রামবাসী ছুটে এসে আহত অবস্থায় মৌসুমীকে উদ্ধার করে। এসময় জনতার ধাওয়ায় জামাই দুলাল হোসেন ও তার এক সহযোগী শাহাদৎ আটক হলেও পালিয়ে যায় অপর ছয় জন। পরে আহত মৌসুমী খাতুনকে ভুরঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।


পালিয়ে যাওয়া দুলালের অন্য সহযোগীরা হলেন- মফিজুল (২৮),হান্নান বাবু (২৯), শাকিল (২৫), বাবু (২৫) ও ফারুক হোসেন (২৯)। এদের মধ্যে ফারুকের বাড়ি নাগেশ্বরী উপজেলার পাখির মোড় এলাকার। অন্যদের বাড়ি নাগেশ্বরী উপজেলার বলদিটারী গ্রামে।

মৌসুমীর বাবা আমজাদ হোসেন জানান, দুলাল তার মেয়েকে বিয়ের পর থেকে নির্যাতন করতো। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তার মেয়ে তার কাছে চলে এসেছে।

তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার দুলাল অস্ত্রসহ সহযোগীদের নিয়ে তার মেয়েকে তুলে নিতে আসে। তার মেয়েকে মারধরও করে। পরে গ্রামবাসী ওদের ধাওয়া করে আটক করে। কয়েকজন পালিয়েও যায়। এ ব্যাপারে তিনি আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

পাইকেরছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক জানান, দুলাল ও তার সহযোগীরা আমজাদ মিস্ত্রির মেয়ে মৌসুমীকে মারধর করে অপহরণের চেষ্টা করলে গ্রামবাসী ধাওয়া করে দুইজনকে আটক করে। পরে তিনি থানায় খবর দিয়ে আটকদের পুলিশে হস্তান্তর করেন। তিনি চান এ ঘটনায় দায়ীরা শাস্তি পাক।

ভুরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাপস চন্দ্র পণ্ডিত জানান, মৌসুমীর ওপর হামলা ও তাকে অপহরণ চেষ্টার অভিযোগে তার বাবা আমজাদ হোসেন আটক দুলাল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। দায়ীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।