আইনজীবী রথিশ হত্যা: স্ত্রী দীপা ভৌমিক ও কামরুলের বিরুদ্ধে চার্জশিট

আইনজীবী রথিশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনারংপুরের আইনজীবী রথিশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা হত্যা মামলায় তার স্ত্রী দীপা ভৌমিক ও দীপার সহকর্মী কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুরের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। এ সময় সাংবাদিক মশিউর রহমান উৎস হত্যা মামলায় আটজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

চাঞ্চল্যকর দুটি মামলার চার্জশিট রংপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফা ইসলাম মুক্তার আদালতে দাখিল করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই আদালতের পেশকার সাইদুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, চলতি বছরের ৩০ মার্চ রংপুর নগরীর আলমনগর বাবুপাড়া এলাকায় বিশেষ পিপি ও আইনজীবী রথিশ চন্দ্র নিখোঁজ হন। এ ঘটনার পরের দিন তার ছোট ভাই সুশান্ত ভৌমিক বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি অপহরণের মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পরে র‌্যাবের সহায়তায় পুলিশ নগরীর রবার্টসনগঞ্জ এলাকায় একটি পরিত্যক্ত বাসা থেকে রথিশ চন্দ্রের লাশ মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার করে।

পুলিশ সুপার আরও জানান, রথিশ চন্দ্র নিখোঁজ হওয়ার পরপরই পুলিশ তার স্ত্রী দীপা ভৌমিকের ওপর নজরদারি শুরু করে। এ ঘটনায় প্রথমে দীপা ভৌমিকের প্রেমিক কামরুল ইসলামকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসা করলেও তিনি রথিশের হত্যা সম্পর্কে পুলিশকে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেন। পরে দীপা ভৌমিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে স্বীকার করে কীভাবে তিনি এবং প্রেমিক কামরুল ইসলাম রথিশ চন্দ্র ভৌমিককে হত্যা করেছে। পরে দীপা ভৌমিকের স্বীকারোক্তির ওপর ভিত্তি করে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দীপা ভৌমিক ও তার প্রেমিক কামরুল ইসলাম দুজনই আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, তদন্ত শেষে দীপা ভৌমিক ও তার প্রেমিক কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর রংপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক যুগের আলো পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মশিউর রহমানকে হত্যা করে তার লাশ নগরীর ধর্মদাস এলাকায় একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় নিহত মশিউর রহমানের বড় বোন সুইটি বেগম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্তের পর পুলিশ মাদক ব্যবসায়ী জহিরুন আখতার জুঁই ওরফে গেদীকে গ্রেফতার করে। পরে তার স্বীকারোক্তির ওপর ভিত্তি করে ভাড়াটিয়া ৭ খুনিকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে তিন খুনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, মাদক ব্যবসায়ী গেদীর বিরুদ্ধে পত্রিকায় বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন করায় গেদী ও তার ৭ সহযোগী মশিউরকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। সে কারণে আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।