গাইবান্ধায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি

গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানি বাড়ছে গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের ১০ ইউনিয়নের অন্তত ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।  তলিয়ে গেছে আমনক্ষেত ও বীজতলাসহ অন্তত ২ হাজার হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, তিস্তার পানি বাড়ায় সুন্দরগঞ্জের কাপাসিয়া, চন্ডিপুর, হরিপুর, তারাপুর ইউনিয়ন, সদরের কামারজানি, মোল্লারচর, ফুলছড়ির উড়িয়া, গজারিয়া, এরেন্ডারাবাড়ী ও সাঘাটার হলদিয়াসহ ৩০ চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তলিয়ে গেছে কাটা রাস্তাঘাটসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। এছাড়া ভাঙনে গত এক সপ্তাহে সহস্রাধিক বসতভিটে বিলীন হয়েছে। বসতভিটে হারিয়ে ও ভাঙন আতঙ্কে দিশেহারা তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা।

ব্রক্ষপুত্র নদের পানির তোড়ে ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়ার কাইয়ার হাট এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ টিআর বাঁধের প্রায় ২০০ ফুট অংশ ধসে গেছে। এতে কঞ্চিপাড়া ও উড়িয়া ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের অর্ধ শতাধিক বসতবাড়ি ও আমন ক্ষেতসহ তলিয়ে গেছে বিভিন্ন ফসলী জমি।

এরেন্ডারাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান বলেন, ‘দুই দিন আগে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা পাঠানো হয়েছে। এখনও কোনও ত্রাণ পাইনি।’

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল বলেন,  ‘চর ও নিম্নাঞ্চলে বন্যার্ত মানুষের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের তালিকা তৈরি করে তাদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকারিভাবে বন্যার্ত মানুষের জন্য ১০০ মেট্রিক টন চাল ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বন্যার্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত থাকবে। এছাড়া ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহাবুবুর রহমান জানান, বুধবার বিকাল পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ৭ সে. ম. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তা, যমুনা, করতোয়া ও ঘাঘট নদীর পানি অপরিবর্তিত থাকলেও তা এখন বিপদসীমা ছুঁইছুঁই। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নদ-নদীর পানি কমতে পারে। তিনি আরও জানান, পানি বাড়ার সঙ্গে বেশ কিছু এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন এলাকায় জরুরীভাবে কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে জিও ব্যাগ ও বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। ভাঙন প্রতিরোধসহ বিভিন্ন এলাকায় সার্বিক খোঁজখবর রাখতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন তদারকি করছে।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আ.ক.ম রুহুল আমীন জানান, পানিতে বিভিন্ন এলাকায় আমন ক্ষেত, বীজতলা, মরিচ, সবজিসহ প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়েছে। পানি বাড়লে এসব ফসলের ক্ষতি হবে। তবে দুই-তিন দিনের মধ্যে পানি সরে গেলে ক্ষতির হাত থেকে এসব ফসল রক্ষা পাবে।