গাইবান্ধার ৪১ ভোটকেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তা ও আলোর দাবি

গাইবান্ধার চরাঞ্চলের একটি ভোটকেন্দ্রগাইবান্ধা-১, ২ ও ৫ সংসদীয় আসনের তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলে ৪১টি ভোটকেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তা ও আলোর ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন ভোটার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। একইসঙ্গে ভোট কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনি মালামাল পরিবহনে বিকল্প ব্যবস্থার দাবিও জানিয়েছেন তারা।

চরাঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার গ্রামের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসাগুলোতে ৪১টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্রে ১৫ ইউনিয়নের মানুষ ভোট দেন। আর এসব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের জন্য নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নদী পার হয়ে যেতে হয়।

ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান বলেন, ‘নদ-নদীগুলোর পানি কমে যাওয়ার অসংখ্য চর জেগে উঠেছে। এ কারণে চরাঞ্চলের যোগাযোগের জন্য কখনও নৌকা, আবার কখনও পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হয়। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে  নির্বাচনি সামগ্রী পৌঁছানোর জন্য ঘোড়ার গাড়ি একমাত্র ভরসা। তাছাড়া এসব ভোটকেন্দ্রে আলোর কোনও ব্যবস্থা নেই। ভোটগ্রহণ শেষ হতে না হতেই অন্ধকার হয়ে য়ায়। ফলে স্বল্প আলোতে ভোট গণনায় সমস্যা হয়। তাই সমস্যা সমাধানে এসব ভোটকেন্দ্রে যোগাযোগের জন্য বিকল্প যানবাহন ও কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।’

ফজলুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু হানিফ প্রামাণিক বলেন, ‘প্রতিটি ভোটকেন্দ্রই চরাঞ্চলের মধ্যে। যোগাযোগ ও অলোর ব্যবস্থা নেই কেন্দ্রগুলোতে। সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে ভোট গ্রহণে প্রতিটি কেন্দ্রে সৌর বিদ্যুতের আলো দিতে হবে। সেইসঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে আলাদা নৌকাসহ যানবাহনের ব্যবস্থা করতে হবে।’

গজারিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামছুল আলম বলেন, ‘চর ও দিপচর এলাকায় ভোটকেন্দ্রগুলো অবস্থিত হওয়ায় আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা থাকে।’

ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাচন অফিসার খন্দকার মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘চরাঞ্চলের ভোট কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি ববস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, সেজন্য স্ট্রাইকিং ফোর্স চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া ভোট কেন্দ্রগুলোতে আলোসহ যোগাযোগের ক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।’

জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সেবাষ্টিন রেমা বলেন, ‘চরাঞ্চলের প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। সমস্যা চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া এসব ভোটকেন্দ্র পরিদর্শকসহ সার্বিক দেখভালের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ভোটকেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করে মতামত দিলে সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গাইবান্ধার পাঁচটি সংসদীয় আসন সাত উপজেলা নিয়ে গঠিত। পাঁচটি সংসদীয় আসনে ৬০৫টি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে চরাঞ্চলে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪১টি। পাঁচটি সংসদীয় আসনে মোট ভোটার ১৭ লাখ ৮৪ হাজার ৫৪৫ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ৮ লাখ ৬৪ হাজার ৮৫ জন ও পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ২০ হাজার ৪৬০ জন।