বেরোবিতে ভর্তি পরীক্ষার সময় ছাত্রাবাস বন্ধের প্রতিবাদে প্রভোস্ট অবরুদ্ধ

শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রভোস্টকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা
ভর্তি পরীক্ষার সময় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ছাত্রাবাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রভোস্টকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। হল প্রভোস্ট মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফেরদৌস রহমান নিজ কক্ষে অবরুদ্ধ হয়ে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত, আমার কিছু করার নেই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগ ও শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২ ডিসেম্বর বেরোবিতে ২০১৮-১৯ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৩০ নভেম্বর সকাল ১০টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ছাত্রাবাস বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এ সিদ্ধান্তের কারণে বঙ্গবন্ধু হল ও ছাত্রী হল থেকে আবাসিক শিক্ষার্থীরা চলে গেলেও শহীদ মুখতার ইলাহী হলের শিক্ষার্থীরা কোনও অবস্থাতে হল ছাড়বেন না বলে জানিয়ে দেন।

এ ঘটনায় শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে প্রভোস্ট ড. ফেরদৌস রহমান হলে গেলে তাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে প্রভোস্টকে তার কক্ষে আটকে রেখে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন বিক্ষোভে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রভোস্টকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরাআবাসিক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ- পরীক্ষার আগে কোনও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল বন্ধ রাখা হয় না। ভর্তি পরীক্ষার জালিয়াতিতে শিক্ষার্থীরা নয় বরং শিক্ষক-কর্মকর্তারা জড়িত, এটা অনেকেই জানেন। ফলে হল বন্ধ রাখতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ডরমেটরি ভবন যেখানে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী বাস করেন সেগুলোও বন্ধ করতে হবে। তা না হলে তারা কোনও অবস্থাতেই হল ছাড়বেন না।

তবে আন্দোলনে ছাত্রলীগ জড়িত নয় বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়া। তার মতে সামান্য ঘটনাকে এত বড় করে দেখার কিছু নেই। চাইলে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

শহীদ মুখতার ইলাহী হলের সামনে আবাসিক শিক্ষার্থীদের অবস্থানশহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রভোস্ট ফেরদৌস রহমান জানান, হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের, সেটা শিক্ষার্থীদের বোঝাতে পারছি না।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ ফাঁড়ি থাকা সত্বেও কোনও পুলিশ সদস্য আবাসিক হলে যায়নি বলে জানা গেছে। পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই মহিবুল ইসলামকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ ঘটনার পর দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ফরিদুল ইসলামকে বার বার খবর দেওয়া হলেও তিনি হলে আসেননি বলে হল প্রশাসনের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রশাসনের পদক্ষেপ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরকে বার বার ফোন করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।