বেরোবি’র প্রক্টরকে অপসারণ

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) প্রক্টর অধ্যাপক ফরিদুল ইসলামকে অপসারণ করা হয়েছে। তার জায়গায় পরিবেশ ও বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আতিউর রহমানকে দায়িত্ব দিয়ে একটি আদেশ জারি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

এর আগে মঙ্গলবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও পরিবেশ ও বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আতিয়ার রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার আবু হেনা মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত আদেশে এ নিয়োগ দেওয়া হয়।

এদিকে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক গাজি মাযহারুল আনোয়ার জানান, কোনও কারণ ছাড়াই একজন প্রক্টরকে এভাবে সরিয়ে দেওয়া শিক্ষকদের প্রতি চরম অসম্মান। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান তিনি।

উল্লেখ্য, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা কর্মচারী বান্ধব পদোন্নতি আপগ্রেডেশন নীতিমালা বাস্তবায়ন, ৪৪ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদানসহ তিন দফা দাবিতে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করে আসছিল। মঙ্গলবার তারা দ্বিতীয় দিনের মতো প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ করছিল। দুপুর আড়াইটার দিকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমানের নেতৃত্বে বেশ কিছু শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা এক জোট হয়ে কর্মচারীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় কর্মচারীদের তৈরি করা মঞ্চ ভাঙচুর করা হয়। হামলায় আটজন কর্মচারী আহত হন। এ সময় প্রশাসনিক ভবনের তালা ভেঙে ফেলা হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ঘটনার পর সন্ধ্যার দিকে উপাচার্যের বাসভবনে কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি নুর আলম ও সাধারণ সম্পাদক মাসুম খানের নেতৃত্বে কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক কোনও সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়।

বৈঠক শেষে কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাসুম খান বলেন, আমরা উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহর কাছে অভিযোগ করেছি, তাবিউর রহমান একজন শিক্ষক। তিনি প্রশাসনের কেউ নন, তারপরও কোন ক্ষমতা বলে তিনি তার বিভাগের শিক্ষার্থীসহ বহিরাগতদের নিয়ে এসে তাদের ওপর হামলা করলেন, আহত করলেন, তালা ভাঙলেন। আমরা এর বিচার দাবি করছি।

তিনি আরোও বলেন, উপাচার্য সবসময় আশ্বাস দেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করেন না। সে কারণে কোনও সিদ্ধান্ত ছাড়া বৈঠক শেষ হয় বলে জানান তিনি।

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বৈঠক শেষ হওয়ার পর আবারও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে নিয়ে উপাচার্য তার বাসভবনে বৈঠক করে প্রক্টর অধ্যাপক ফরিদুল ইসলামকে সরিয়ে আতিউর রহমানকে প্রক্টরের দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেন। এর পরেই গভীর রাতে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন প্রক্টরের নিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়।
তবে এ ব্যাপারে অধ্যাপক ফরিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।