দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বজলুর রশিদ বলেন, ‘ভেতরে টিকিট কালোবাজারি হলে সেটি দেখার দায়িত্ব জিআরপি পুলিশের। আর বাইরে যদি কালোবাজারি হয়, তাহলে জড়িতদের আমরা আটক করি। কালোবাজারি সচরাচর রেলওয়ে স্টেশনের ভেতরেই হয়, বাইরে তেমনটা হয় না। তবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালালে আমরা সঙ্গে থাকতে পারি।’
এ প্রসঙ্গে জানতে রেলওয়ে পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) গুলজার হোসেনের মোবাইলফোনে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
আরও খবর... বেকার ও নেশাগ্রস্তরা ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করছে!
দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে জানা গেছে, দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সবসময়ই কালোবাজারিতে টিকিট বেচাকেনা হয়। এরসঙ্গে ১৫-২০ জনের একটি চক্র জড়ি রয়েছে। এরমধ্যে কেউ ফ্ল্যাক্সিলোডের ব্যবসায়ী, কেউ হকার ও কেউ বেকার। টিকিট কালোবাজারি করাই তাদের মূল কাজ।
রবিবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে স্টেশনের মূল গেটে কথা হয় রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি ২০ আগস্টের টিকিট কেনার জন্য এসেছেন। রফিকুলের অভিযোগ, এসি কিংবা এসি চেয়ারের টিকিট পাওয়া যায়নি। শোভন চেয়ারের টিকিট কিনেছেন। ৩-৪ দিন আগে না কিনলে টিকিট পাওয়া যায় না। অনলাইনের কথা বলে টিকিট দেওয়া হয় না। পরে বাধ্য হয়েই বেশি টাকা দিয়ে কালোবাজারিদের কাছ থেকে কিনতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টেশন এলাকার এক দোকানদার বলেন, ‘এখানে যারা টিকিট কালোবাজারিতে বিক্রি করে তাদের প্রতিদিনের আয় প্রায় ৫ হাজার টাকা। একটি টিকিট কালোবাজারিতে ন্যূনতম পাঁচশ টাকা লাভ না হলে বিক্রি করা হয় না। কখনও কখনও একটি টিকিটে লাভ হয় দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত! তাদের যে সিন্ডিকেট রয়েছে, সেটি খুবই শক্তিশালী। তারা প্রকাশ্যে এসব করলেও কাউকে আটক করা হয় না। মাঝে-মাঝে দুই একজনকে আটক করা হলেও কয়েকদিনের মধ্যেই ছাড়া পেয়ে যায়।’
আরেকজন অভিযোগ করেন, ‘আমরা প্রতিনিয়তই দেখি প্রকাশ্যে টিকিট কালোবাজারিতে বেচাকেনা হয়। কেউ আটক হয়, ছাড়া পেয়ে আবার সেই পুরাতন ব্যবসায় আসে। একজন কালোবাজারি টিকিট কিনে সেই টিকিট দ্বিগুণ দামে বিক্রি করেন। ২-৩ দিনের মধ্যেই ডাবল লাভ। ’
এ প্রসঙ্গে দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (পরিবহন) শওকত জামিল মহসীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কালোবাজারি রোধ করতে আমরা ঈদের আগে থেকেই প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি, অধিক সংখ্যক পুলিশ রাখার জন্য বলা হয়েছে। যারা কালোবাজারি করছে, তাদেরকে চেনার উপায় নেই।’