স্থানীয়রা জানান, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার ১২ কিলোমিটার পূর্বে নবাবগঞ্জ উপজেলা, চৌদ্দ কিলোমিটার দক্ষিণে হাকিমপুর উপজেলা ও হিলি স্থলবন্দর এবং ছয়চল্লিশ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে ঘোড়াঘাট উপজেলা। নবাবগঞ্জ এবং ঘোড়াঘাটে কোনও রেলস্টেশন নেই। হিলিতে রেলস্টেশন থাকলেও সেখানে আন্তঃনগর ট্রেনের নেই যাত্রাবিরতি। এ কারণে ওইসব এলাকার যাত্রীদের বিরামপুর থেকেই চলাচল করতে হয়। কয়েকটি উপজেলার যাত্রীরা এই স্টেশন থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করলেও বাড়ানো হয়নি টিকিটের সংখ্যা।
খুলনার উদ্দেশ্যে বিরামপুর স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা নাসিমা বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা ধরে স্টেশনে বসে আছি। স্টেশনের বিশ্রামাগার বসার অযোগ্য হওয়ায় তালাবদ্ধ রয়েছে, তাই বাধ্য হয়ে প্লাটফর্মে বসে আছি। স্টেশনে কোনও টয়লেটের ব্যবস্থা না থাকায় আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়। এসব সমস্যার সমাধান হলে আমরা ভালো যাত্রীসেবা পেতাম।
টিকিট সমস্যা নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিরামপুর রেল স্টেশনের এক কর্মী বলেন, দ্রুতযান ট্রেনে পূর্বে ৩৪টি সিট বরাদ্দ ছিল। কিন্তু দ্রুত যান ট্রেন পঞ্চগড় পর্যন্ত যাত্রা শুরু করলে বিরামপুর স্টেশের জন্য পূর্বের বরাদ্দ কমিয়ে বর্তমানে ২৫টি সিট দেওয়া হয়।
বিরামপুর রেলস্টেশনের বুকিং সহকারী মোর্শেদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, এই স্টেশন থেকে প্রতিদিন ঢাকা এবং খুলনাগামী আন্তঃনগর ট্রেনে অতিরিক্ত ৫০টি শোভন চেয়ারের টিকিট প্রয়োজন। এছাড়াও দশটি এসি চেয়ার ও পাঁচটি স্লিপার আসন বরাদ্দ হওয়া দরকার। রাজশাহীগামী বরেন্দ্র এবং তিতুমীর এক্সপ্রেসে অতিরিক্ত ২০টি আসন বরাদ্দ দিলে যাত্রীদের সুবিধা হতো বলে জানান তিনি।
বিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রাজু বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, নিরাপদ যাত্রার জন্য সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে ট্রেন প্রিয় বাহন। বিরামপুর উপজেলা একটি প্রস্তাবিত জেলা শহর, চারটি উপজেলার কেন্দ্রে অবস্থিত। তাই অন্যান্য উপজেলার রেলযাত্রীরা বিরামপুর স্টেশন ব্যবহার করেন। এ অবস্থায় বিরামপুর স্টেশনের জন্য টিকিটের বরাদ্দ বাড়াতে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে।
বিরামপুর স্টেশন মাস্টার জয়ন্ত কুমার বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বিরামপুর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। এই স্টেশন থেকে আশপাশের চার উপজেলার মানুষ চলাচল করেন। দিন দিন যাত্রীর সংক্যা বাড়ছে। যাত্রীদের প্রচুর চাপ থাকলেও চাহিদা অনুযায়ী টিকিট বরাদ্দ নেই। এখানে এসি কেবিন ও এসি চেয়ারকোচের বরাদ্দ নেই, কিন্তু তার বিপরীতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ যাত্রী এ পথে চলাচল করেন। যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য নির্মিত বিশ্রামাগারগুলো ব্যবহার অনুপযোগী। তাই আসন বৃদ্ধি ও যাত্রীদের নানা সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বিরামপুর রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি করা সব আন্তঃনগর ট্রেনের আসন সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য রেলমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, কোচ সংখ্যা বাড়লে বিরামপুরের জন্য আসন সংখ্যাও বাড়বে।