দিনাজপুরে দুস্থ মানুষের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি কম্বল

ছবিটি রেল স্টেশন এলাকা থেকে তোলা হয়েছেদিনাজপুরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনও অনেক দুস্থ মানুষের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি শীতবস্ত্র। তারা শীতের প্রকোপে কষ্টে জীবনযাপন করছেন।

দিনাজপুর সদর উপজেলার ৪নম্বর শেখপুরা ইউনিয়নের কিষাণবাজার এলাকার কাঞ্চু রায় বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের এলাকায় কম্বল বিতরণ করেনি। এর আগেও করেনি। 

শীত নিবারণ করতে আগুন পোহাচ্ছে লোকজনগোপালপুর এলাকার তহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কখনোই দেখলাম না এই এলাকায় সরকারি কম্বল বিতরণ করতে। এই এলাকার নদী তীরবর্তী স্থানে যারা বসবাস করছেন, তাদের জন্য কম্বল খুবই প্রয়োজন।’

উত্তর গোপালপুর ও পূর্ব রামনগর মৌজার মেম্বার দোলন রায় বলেন, ‘আমার এলাকায় দুস্থ মানুষ আছে প্রায় সাড়ে ৩শ। আর আমি পেয়েছি মাত্র ১০টি কম্বল। গত বছর পেয়েছিলাম ১৫টি কম্বল।’

শীত

দিনাজপুর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (সিডিসি) নির্বাহী পরিচালক যাদব চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশের সদর উপজেলার ৪নম্বর শেখপুরার কিসামত মাধবপুর, শিবপুরের কিছু অংশ, রামনগরের কিছু অংশ রয়েছে, সেখানে কখনও সরকারিভাবে কম্বল কিংবা গরম কাপড় বিতরণ করা হয়নি। প্রায় ১০ বছর আগে সরকারিভাবে মুশহর পাড়ায় (ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠী) কম্বল বিতরণ করা হয়েছিল। এরপর আর হয়নি। অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন পিছিয়ে পড়া এই জনগোষ্ঠীর দুস্থ-অসহায় মানুষগুলো।’

শীত

৪ নম্বর শেখপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে ২০টি ও প্রত্যেক মেম্বারকে ১০টি করে কম্বল দেওয়া হয়েছে। মাত্র ২০টি কম্বল আমি কোথায় বিতরণ করবো। শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে শীত বেশি, এরপরও কম্বল বিতরণ করা যাচ্ছে না। তবে আমি উদ্যোগ নিয়েছি নিজস্ব অর্থে ৫শ কম্বল কিনে বিতরণ করবো।’

ছবিটি রেল স্টেশন এলাকা থেকে তোলা হয়েছে

দিনাজপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘দিনাজপুরে এক লাখ কম্বলের চাহিদার কথা মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছিল। প্রায় ৭৭ হাজার পিস কম্বল পাওয়া গেছে। যা উপজেলাওয়ারী বণ্টন করা হয়েছে। এছাড়াও কম্বল কেনার জন্য নগদ ১০ লাখ টাকা পাওয়া গেছে। তবে আগে কম্বল ছাড়া অন্য গরম কাপড় দেওয়া হলেও গত কয়েক বছর ধরে শুধু কম্বল দেওয়া হচ্ছে। তবে, কম্বল এমন একটা জিনিস, যার আছে সেও চায়। জেলার মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ মানুষকে দুস্থ হিসাব করে বরাদ্দের জন্য চাহিদা দেওয়া হয়। একটি বাড়িতে ৪ থেকে ৫ জন করে সদস্য থাকে। গত ১২ বছর ধরে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতিটি মানুষের বাড়িতেই কম্বল পৌঁছেছে। কম্বল ছাড়া অন্য কিছু দেওয়ার নির্দেশনা নেই। তবে, এবার ৯৭৮ পিস শিশু পোশাক কেনা ও বিতরণ করা হবে।’