মসজিদের অনুদান আত্মসাৎ: ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইউনিয়ন লিডারের কারাদণ্ড

জয়নাল আবেদিন ওরফে মণ্ডল (সাদা পাঞ্জাবি পরা)ঠাকুরগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া মসজিদের অনুদানের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক ইউনিয়ন লিডারকে কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তার নাম মো. জয়নাল আবেদিন ওরফে মণ্ডল (৪০)। তার বাড়ি সদর উপজেলার শুখানপুকুরী ইউনিয়নে।

নিজ নিয়ন্ত্রণাধীন মসজিদগুলোতে অনুদানের পুরো টাকা না দিয়ে কম দেওয়া ও বাস্তবে না থাকা কিছু মসজিদের নাম দেখিয়ে অনুদান আত্মসাতের অভিযোগ তোলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (২৬ মে) দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে অভিযোগগুলো প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ-আল-মামুন।

দণ্ডপ্রাপ্ত মো. জয়নাল আবেদিন ওরফে মণ্ডল ওই ইউনিয়নের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইউনিয়ন লিডারের পাশাপাশি ব্যাংরোল বুঝারিপাড়া মসজিদের খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার পিতার নাম তোয়াজ শেখ।

সদর ইউএনও এর ফেসবুক পেজ থেকে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রত্যেকটি মসজিদে ৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেই অনুযায়ী ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় পৌরসভাসহ ১ হাজার ১৪০টি মসজিদে ঈদের আগেই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের টাকা দেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার। ইসলামিক ফাউন্ডেশন সমুদয় টাকা উত্তোলন করে তাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ইউনিয়নের মসজিদগুলোতে সেই টাকা বিতরণ করেন।

এদিকে সদর উপজেলার শুখানপুকুরী ইউনিয়নের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি জয়নাল আবেদিন ওরফে মণ্ডল তার নিয়ন্ত্রণাধীন মসজিদগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দ পাঁচ হাজার টাকা করে না দিয়ে কোনও মসজিদে ২ হাজার, কোনও মসজিদে ৩ হাজার আবার কোথাও আড়াই হাজার টাকা করে বিতরণ করেন। শুধু তাই নয় ওই ইউনিয়নে ৬টি ভুয়া মসজিদ দেখিয়ে ১. রাসেদ, পিতা-শুকুর আলী মাস্টার ২. সাহার আলী, পিতা- ভুতু শেখ ওরফে কোরবান ৩. শুকুর আলী, পিতা-ভুতু শেখ ওরফে কোরবান ৪. ইলিয়াস, পিতা-রহমান ৫. আলম, পিতা-ইয়ামুদ্দিন ও বদিউল, পিতা-কানচিয়া মুন্সিকে মসজিদের মুয়াজ্জিন দেখিয়ে ৩০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।

বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে সোমবার (২৪ মে) রাতেই ওই ইউনিয়নের ইউপি মেম্বার আমজাদসহ স্থানীয়রা জয়নাল আবেদিন ওরফে মণ্ডলকে ইউনিয়ন পরিষদে আটক করে রাখেন। মঙ্গলবার তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হলে, তিনি দোষ স্বীকার করেন।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে মসজিদে মসজিদে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া অনুদানের টাকা আত্মসাতকারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা প্রত্যেকটি মসজিদে খোঁজ-খবর নেওয়া শুরু করেছি। অনিয়ম পেলেই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’