ফুলবাড়ি থেকে বিরামপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা গর্ভবতী মা নাজমা বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গর্ভবতী মা ও নবজাতকদের ভালো পরিচর্যা ও সুন্দর ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে স্বাভাবিক ডেলিভারি করেন সে জন্যই এখানে আসা। আসার পর দেখলাম এখানকার সেবা খুবই ভালো। ডাক্তার ও নার্সরা গর্ভবতী মহিলা ও নবজাতকদের সুন্দরভাবে পরিচর্যা করছেন।
হিলি থেকে বিরামপুর হাসপাতালে যাওয়া স্বাভাবিক শিশু জন্মদানকারী মা রত্না বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, প্রথমবারের মতো গর্ভবতী হওয়ায় সন্তান জন্মদান নিয়ে খুব দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম। তার ওপর ডাক্তারদের কাছে গেলেই সিজার করতে বলেন। প্রথম বাচ্চা, কি হয় না হয় সেও চিন্তাও ছিল। আশেপাশের অনেকের কাছে শুনে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছিলাম। তারা খুব সুন্দরভাবে আমার স্বাভাবিক ডেলিভারি করিয়েছেন। বাচ্চা ও আমি দুজনেই খুব ভালো আছি।
তার স্বামী নজরুল ইসলাম বলেন, লোকজনের কাছে বিরামপুর হাসপাতালে স্বাভাবিক ডেলিভারির কথা শুনে গতকাল আমার স্ত্রীকে পাঠিয়েছিলাম। আসার পর তারা পরীক্ষ-নীরিক্ষা করেছে। এর পর রাতেই স্বাভাবিক ডেলিভারি হয়েছে। বাচ্চা ও মা দুজনেই ভালো আছেন। ডাক্তার-নার্সরা ভালোভাবে তাদের যত্ন নিয়েছেন।
ফুলবাড়ি থেকে স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা সবুজ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নির্ধারিত তারিখের আগের রাতে আমার স্ত্রীর প্রসব বেদনা ওঠায় খুব ভয় পেয়ে যাই। একে তো করোনার আতঙ্ক, তার ওপর আমাদের অনাগত সন্তান। করোনার মধ্যে কোথায় যাবো কি করবো তা ভেবে পাচ্ছিলাম না। স্থানীয়দের পরামর্শে রাতেই বিরামপুর হাসপাতালে নিয়ে আসি। এর পর চিকিৎসক ও নার্সদের প্রচেষ্টায় রাতেই স্বাভাবিক ডেলিভারির মাধ্যমে আমাদের সংসারে নতুন অতিথি আসে।
বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সোলায়মান হোসেন মেহেদি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, করোনা মহামারির মধ্যেও আমরা হাসপাতালের স্বাভাবিক স্বাস্থ্যসেবাগুলো চালু রেখেছি। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের স্বাভাবিক সন্তান প্রসব অব্যাহত রেখেছি। ২৫শে মার্চ থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত ১৭৩টি শিশুর স্বাভাবিক জন্ম হয়েছে। অন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো যেখানে ডেলিভারি করছে না, সেখানে আমরা স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। ফলে এই হাসপাতালে আশেপাশের তিন-চার উপজেলা থেকেই রোগীরা আসছেন। আমাদের এখানে যদি একজন অজ্ঞান করার চিকিৎসক থাকতো তাহলে হয়তো শিশুর স্বাভাবিক জন্মের সংখ্যা আরও বাড়তো।