পেঁয়াজ আসার খবরেই দাম কমলো কেজিতে ১০-১৫ টাকা

পেঁয়াজভারত রফতানির অনুমতি দেওয়ায় পাঁচ দিন বন্ধের পর আজ শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করবে। পেঁয়াজ আসার খবরেই হিলিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা। শনিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত বন্দর দিয়ে এখনও পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়নি। তবে দুপুরের পর পেঁয়াজ আমদানি শুরু হতে পারে বলে জানা গেছে।

হিলি স্থলবন্দরের আড়তগুলোতে পেঁয়াজ কিনতে আসা আব্দুল খালেক ও সাইদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকেই হিলি স্থলবন্দরের বিভিন্ন আড়তগুলো ও বাজারে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়। প্রায় প্রতিদিনই পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। এতে করে আমাদের মতো খুচরা বিক্রেতাদের পেঁয়াজ কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাড়তি দামের কারণে পেঁয়াজ কেনা থেকে বিরত থাকছি। আড়তগুলোতে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ থাকলেও আমদানি বন্ধ থাকায় তারাও দাম বাড়িয়ে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। মাঝে আমদানির খবরে দাম কিছুটা কমলেও আবারও বাড়তে থাকে। গতকালও বন্দরের আড়তগুলোতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০-৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। তবে পেঁয়াজ আমদানি হবে এমন খবরে দাম কমে গেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ওই সব পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করলে দাম আরও কমতে পারে।’

হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা আব্দুর করিম ও নজরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভারত থেকে যখনই পেঁয়াজ আসা বন্ধ হয়, তখনই দেশের পেঁয়াজের বাজারে আগুন লাগে যায়। ভারত যেদিন পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিলো, সেদিন পেঁয়াজ কিনলাম ৩৫ টাকা কেজি দরে। পরের দিন সেই পেঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকা উঠে যায়। গতকাল তা আরও বেড়ে ৭০-৭৫ টাকা উঠে গেলো। এভাবে দাম বাড়লে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবো। বাজারে কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। ইচ্ছা মতো দাম বাড়ানো হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি প্রয়োজন।’

হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আলম হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, গত কয়েকদিন বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ ঢুকবে এমন খবরে, গত কয়েকদিন ধরেই পেঁয়াজের বাজার উঠানামা করছে। গতকাল আমরা পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ৬৫-৭০ টাকা কেজি দরে। আজ বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের ট্রাক প্রবেশের কথা রয়েছে। এ কারণে পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।’

হিলি স্থলবন্দর আমদানি রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে কোনও কিছু না জানিয়ে গত সোমবার ভারত সরকার পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়। এতে করে আমাদের দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা ২৫০ ট্রাক পেঁয়াজ ভারতের অভ্যন্তরে আটকা পড়ে যায়। গত কয়েকদিন ধরে ওই সব পেঁয়াজ আটকে থাকার কারণে ইতোমধ্যেই অনেক ট্রাকের পেঁয়াজ পচে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে যায়। গত কয়েকদিন ধরেই অনুমতি দেবে দেবে শোনা যাচ্ছিল, এমন অবস্থায় শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে ভারত সরকার অনুমতি দিয়েছে। এ কারণে আজ শনিবার দুপুর থেকে বন্দর দিয়ে আটকে থাকা পেঁয়াজগুলো আমদানি শুরু হবে। তবে তারা শুধু গত রবিবার টেন্ডার হওয়া পেঁয়াজগুলোই রফতানির অনুমতি দিয়েছে। এসব পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে পেঁয়াজের দাম আরও কমে আসবে। আমরা তাদের অনুরোধ জানিয়েছি, অন্তত আমাদের যেসব ট্রাক আটকা রয়েছে এবং এলসি দেওয়া রয়েছে, সেগুলো দেওয়ার জন্য। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সেগুলো রফতানির বিষয়ে সিন্ধান্ত নেওয়া হবে।’