পঞ্চগড়মুক্ত দিবস পালিত

পঞ্চগড়মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর আক্রমণে ১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর পঞ্চগড় পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয়। সেদিন পঞ্চগড়ে উড়িয়ে দেওয়া হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। সেই থেকে দিনটিকে স্মরণ করে আসছেন জেলাবাসী। আজও যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পঞ্চগড়মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নানা কর্মসূচির আয়োজন করে। এর মধ্যে সকাল ৯টায় পঞ্চগড় সার্কিট হাউজে নির্মিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বধ্যভূমির বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শহীদ মিনার চত্বরে আলোচনা সভা উল্লেখযোগ্য।

অপুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক ড. সাবিনা ইয়াসমিন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল আলীম খান ওয়ারেসি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল মান্নান, পৌর মেয়র তৌহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলাউদ্দীন প্রধান, এটিএম সারোয়ার হোসেন, সায়খুল ইসলাম, ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

জেলা পর্যায়ের সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারবর্গসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।

মুক্তিযোদ্ধা মো. সায়খুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ সাড়ে সাত মাস ধরে এ এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে যুদ্ধ চলতে থাকে। জুলাই মাসে শুরু হয় গেরিলা যুদ্ধ। মুক্তিযোদ্ধাদের অব্যাহত গেরিলা আক্রমণের তীব্রতায় কোনঠাসা হয়ে পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদররা প্রাণভয়ে পালাতে শুরু করে। নভেম্বর মাসে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনী যৌথভাবে পাকবাহিনীর ক্যাম্পে হামলা চালানো শুরু করে। এর ফলে পাকবাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণে ২০ নভেম্বর অমরখানা, ২৫ নভেম্বর জগদলহাট, ২৬ নভেম্বর শিংপাড়া, ২৭ নভেম্বর তালমা, ২৮ নভেম্বর পঞ্চগড় সিও অফিস এবং একই দিনে আটোয়ারি ও মির্জাপুর মুক্ত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে পাকবাহিনীর ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ শুরু করায় ২৯ নভেম্বর পাকবাহিনীমুক্ত হয় পঞ্চগড়।