পঞ্চগড়ে ৫৫ বছরের বেশি বয়সীদের ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশন চলছে

সুরক্ষা অ্যাপস জাতীয়ভাবে চালু হয়েছে। অ্যাপসে ঢুকতে কোনও সমস্যা হচ্ছে না। তবে আপাতত ৫৫ বা তদুর্ধ্ব বয়সীদের জন্য নিবন্ধন চলমান রয়েছে। অন্যদের রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে না।

সাংবাদিক কমিউনিটিতে অনেকে টিকা নেওয়ার পক্ষে। তবে অনেকে এখনও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। আগে যারা নেবেন তাদেরকে দেখে শুনে পর্যবেক্ষণের পর তারা সিদ্ধান্ত নেবেন এমন মন্তব্য করছেন।  বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন গ্রহণের পর সাধারণ মানুষের মধ্যে ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার বিষয়গুলোও আলোচনা হচ্ছে।

পঞ্চগড় সিভিল সার্জন ডা. মো. ফজলুর রহমান জানান, এক ভায়াল ডোজে ১০টি ডোজ রয়েছে। তবে এক ভায়ালে ৯ জনকে টিকা দেওয়া যাবে।

সরকারের টাকায় কেনা এই ভ্যাকসিনের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য অন্য জেলাগুলোতে ১০ ডোজ ১০ জনকে দেওয়ার কথা বলা হলেও পঞ্চগড়ে কেন এক ভায়াল ৯ জনকে দেওয়া হবে সে প্রশ্নের উত্তর দেননি তিনি। স্থানীয়দের এই সংশয় দূর করতে স্বাস্থ্য বিভাগে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, এক ভায়ালে ১০ ডোজ বলা হলেও সেটা ৯ থেকে সাড়ে ৯ ডোজও হতে পারে।

এদিকে, পঞ্চগড় স্বাস্থ্য বিভাগ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিকসহ ১৮টি গ্রুপের সকলের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণাসহ মোবাইল ফোনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জেলার ৪টি উপজেলায় (তেঁতুলিয়া, বোদা, আটোয়ারী ও দেবীগঞ্জ) প্রথম ডোজের ২৪ হাজার টিকা আনুপাতিক হারে পৌঁছাবে। হাসপাতালের ফ্রিজে টিকা সংরক্ষণ করা হবে।

সিভিল সার্জন জানিয়েছেন, আপাতত প্রথম ডোজের ২৪ হাজার টিকা এসেছে, দ্বিতীয় ডোজের টিকা এখনও আসেনি। তবে প্রথম ডোজের টিকা প্রয়োগের আট সপ্তাহের মধ্যে আসবে। একজন ব্যক্তির শরীরে দুই ডোজ টিকা প্রয়োগ করতে হবে। আট সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হবে। তবে কতদিন সুরক্ষিত থাকবে তা এখনও স্পষ্ট নয়, আসলে এটি গবেষণার বিষয়। পরবর্তীতে টিকা নেওয়ার প্রয়োজন হবে কিনা এটি এখনও বলা যাচ্ছে না।

রেজিস্ট্রেশন ও টিকা সরবাহের ভিত্তিতে চাহিদা অনুসারে ধারাবাহিক ভাবে টিকা দেওয়া হবে। জাতীয়ভাবে সরকারের আমদানির ওপর টিকা প্রদানের বিষয়টি নির্ভর করবে। রেজিস্ট্রি হলেই টিকা দেওয়া হবে। রেজিস্ট্রেশনের পর মোবাইল নম্বরে এসএমএস বার্তার মাধ্যমে টিকাদান কেন্দ্র ও তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।

 

সিভিল সার্জন জানান, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চগড় জেলা শহরে ৫টি এবং প্রত্যেক উপজেলায় ২টি করে আপাতত মোট ১৩টি টিকা প্রদান কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। পরবর্তীতে ৬৬টি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে।

সিভিল সার্জন আরও জানান, পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. তোফায়েল আহমেদ ও ডা. আতাহার সিদ্দিকী ঢাকা থেকে করোনার ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা পদ্ধতির ওপরে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। এই দুই চিকিৎসক প্রত্যেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩ জন এবং পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ২ জনকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।

টিকার বিষয়ে জানতে চাইলে আটোয়ারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, ‘ভ্যাকসিন নেবো। আমি ইতোমধ্যে রেজিস্ট্রেশন করেছি। আমার মোবাইলে এসএমএসও এসেছে।’

পঞ্চগড় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ প্রধান জানান, ‘অবশ্যই ভ্যাকসিন নেবো। আমাদের তো নিতেই হবে। শুধু আমি না, আমরা সব মুক্তিযোদ্ধাই টিকা নেবো।’

পঞ্চগড় পূবালী ব্যাংকের ম্যানেজার মধু বাবু রায় জানান, ‘সরকার যেহেতু টিকা দিবে অবশ্যই নেবো। কী হবে দেখা যাবে।

তবে পঞ্চগড় শহরের ন্যাশনাল ব্যাংকের ম্যানেজার গোলাম গাজিউর রহমান জানান, ‘প্রথম ধাপে নিতে চাচ্ছি না। ভয়ও লাগছে। দ্বিতীয় ধাপে নিতে চাই।’

পঞ্চগড় সদর উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মো. খলিলুর রহমান জানান, টিকা তো নিতে হবে। তবে আগে দেখি কী হয়?

পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক মো. কাইয়ুম আলী জানান, সরকার দেওয়ার জন্য ডাকলে অবশ্যই নেবো। আল্লাহপাক যদি এই উছিলায় সুস্থ রাখেন।’