আমনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বোরোর মাঠে ব্যস্ত চাষিরা

আমন মৌসুমে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণের কারণে ধানের উৎপাদন খানিকটা কম হয়েছে। তবে ভালো দাম পাওয়ায় বড় লোকসানে পড়তে হয়নি দিনাজপুরের চাষিদের। এবার ভালো লাভের আশায় বোরোর মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। আমন মৌসুমের মতো ধানের দাম থাকলে, কৃষকদের ভালো লাভ হবে বলে আশাবাদ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে হাকিমপুর উপজেলায় সাত হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে হাইব্রিড জাতের ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। উফশী জাতের ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় হাজার ৮০ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে এক হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান রোপণ শেষ হয়েছে। উফশী জাতের ধান পাঁচ হাজার ৩৯০ হেক্টর জমিতে রোপণ সম্পূর্ণ হয়েছে। সব মিলিয়ে ইতোমধ্যে ছয় হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে ধান রোপণ শেষ হয়েছে। এখনও ধান রোপণ কার্যক্রম চলছে। এতে লক্ষ্যমাত্রার অধিক ধান চাষাবাদ হবে বলে আশাবাদ কৃষি অফিসের।

হিলির চণ্ডিপুর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমন মৌসুমে ধানের যে দাম গেছে, সে দাম যদি থাকে, এবারে বোরো ধানে কৃষকরা যথেষ্ট লাভ করতে পারবেন। আর যদি আমন মৌসুমের মতো দাম না থাকে, তাহলে কিন্তু বোরো ধান আবাদ করে কৃষকরা লোকসানে পড়বেন।

হিলির ইসমাইলপুরের কৃষক জামাল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গত আমন মৌসুমে রোগ, পোকামাকড় এবং ইঁদুরের আক্রমণ বেশি হওয়ায় ফলন খানিকটা কম পেয়েছি। বিশেষ করে কাটারি জাতের ধানের ফলন কম হয়েছে। তবে ধানের দাম এক হাজার টাকার বেশি থাকায় বড় কোনও লোকসানে পড়তে হয়নি। এ কারণে আমনের সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বোরো ধান বেশি করে লাগাচ্ছি। গতবার যেখানে পাঁচ বিঘা জমিতে আমন লাগিয়েছিলাম, এবার সেখানে সাত বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগাচ্ছি। এবারও ধান মণপ্রতি এক হাজার বা তার উপরে থাকলে কৃষক লাভবান হবেন।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. মমতাজ সুলতানা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, হাকিমপুর উপজেলায় এবার সাত হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের ছয় হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে। এরমধ্যে আমাদের হাইব্রিড জাতের ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা এক হাজার ১৫০ হেক্টর জমি। আমরা আশা করছি হাইব্রিড জাতের ধান চাষাবাদ আরও বাড়বে। এর কারণ হলো, সরকারের পক্ষ থেকে কৃষি প্রণোদনা ও পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় উপজেলায় এক হাজার ৭০০ জন কৃষকদের মাঝে হাইব্রিড জাতের ধানের বীজ সহায়তা হিসেবে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গত আমন মৌসুমে কৃষকরা ধানের ভালো দাম পাওয়ার কারণে, এবার তারা বোরো আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভালো ফলনের জন্য কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।