চালের আমদানি বাড়ায় কমেছে দাম

বিভিন্ন সমস্যা কাটিয়ে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আগের মতো চালের আমদানি বেড়েছে। আমদানি বাড়ায় ও বন্দরে আটকে থাকা সব চাল খালাস হওয়ায় বাজারে বেড়েছে সরবরাহ। এতে সবধরনের চালের দাম কেজিতে ২-৩ টাকা করে কমেছে। চালের দাম কমায় স্বস্তি ফিরেছে খেটে খাওয়া নিন্ম আয়ের মানুষজনের মধ্যে। চালের আমদানি অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমবে আমদানিকারকদের।

হিলি স্থলবন্দর ও ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, আমনের ভরা মৌসুমে দেশে চালের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ায় বিপাকে পড়েন খেটে খাওয়া নিন্ম আয়ের মানুষজন। এমন অবস্থায় দেশে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে বিদেশ থেকে চাল আমদানির সিন্ধান্ত নেয় সরকার। কয়েক দফায় দেশের বিভিন্ন স্থানের আমদানিকারকদের কয়েকলাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি চাল আমদানি শুল্ক ৬২.৫ ভাগ থেকে কমিয়ে ১৫ ভাগ নির্ধারণ করা হয়। এতে বন্দর দিয়ে দীর্ঘ দেড়বছর ধরে বন্ধ থাকার পর গত ৯ জানুয়ারি চাল আমদানি শুরু হয়, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।

তবে ভারতের অভ্যন্তরে যানজট সমস্যার কারণে চালের ট্রাক ঠিক সময়ে বন্দরে প্রবেশ করতে না পারায় চালের দামে তেমন একটা প্রভাব পড়েনি। বর্তমানে যানজটসহ অন্যান্য জটিলতা নিরসন হওয়ায় চালের আমদানি বেড়েছে। এ কারণে বাজারে সরবরাহ বাড়ায় চালের দামও কমতে শুরু করেছে।

হিলি বাজারে চাল কিনতে আসা ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা তো গরীব মানুষ, সারাদিন ভ্যান চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনও মতে সংসার চলে। কিন্তু যে হারে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে আমাদের বেঁচে থাকাই কঠিন অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে চালের দাম একটু কমেছে। তবে আরও কমলে গরিবের উপকার হতো।

বাজারে চাল কিনতে আসা গৃহবধূ নাজমা বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমার পাঁচ জনের সংসার আর উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মাত্র একজন। বর্তমানে চাল-তেলসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়ায় আমাদের জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়ে। যে তুলনায় চালের দাম বেড়েছিল, সে তুলনায়তো দাম কমছে না। তাই দাম কমানোর পাশাপাশি ১০ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানান তিনি।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক শাহিনুর রেজা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সরকারের অনুমোদন স্বাপেক্ষে বন্দর দিয়ে চাল আমদানি অব্যাহত রেখেছেন আমদানিকারকরা। তবে বিগত সময়ে ভারতের অভ্যন্তরে যানজটের কারণে চালের ট্রাকগুলো ঠিকমতো বন্দরে প্রবেশ করতে পারতো না। এছাড়াও হিলি স্থলবন্দরেও স্থান সংকুলান না হওয়ায় পাথর ও চালের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়ে গিয়েছিল। ইতোমধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষ কাস্টমস ও ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে সমস্যার সমাধান করেছে। এ কারণে বন্দর দিয়ে চালের আমদানি আগের তুলনায় বেড়েছে। এছাড়া শুল্ক কমানোর আভাসসহ স্থান সংকুলান না হওয়ার কারণে বন্দর থেকে চাল খালাস না নেওয়ায় বন্দরের অভ্যন্তরে কয়েকশ’ চালবাহী ট্রাক আটকা ছিল। ইতোমধ্যে সেসব চালও আমদানিকারকরা খালাস করেছেন। এতে বাজারে চালের সরবরাহ বেড়েছে, দামও কমে এসেছে। আমদানি সব চাল দেশের বাজারে প্রবেশ করলে দাম আরও কমবে বরে জানান তিনি।