ঈদে দেশে ফিরতে হিলি চেকপোস্টে ভারতীয় ট্রাক চালকদের অবস্থান

ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে আসা ভারতীয় ট্রাক থেকে পণ্য খালাস হয়নি। এজন্য হিলি স্থলবন্দরে পণ্য নিয়ে আটকে পড়েছেন ভারতীয় ট্রাক চালকরা। তাই নিজ দেশে ঈদ উদযাপন করতে যাওয়ার অপেক্ষায় সীমান্তের চেকপোস্ট গেটে অবস্থান নিয়েছে তারা। এদিকে খালি ট্রাক যাওয়া বন্ধ করে দিলেও পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে সেটি ছেড়ে দেয় তারা।

বৃহস্পতিবার (১৩ মে) সকাল ১০টা থেকে হিলি সীমান্তের চেকপোস্ট গেটে ভারতীয় ট্রাক চালকরা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় অবস্থান নেয়। এসময় তাদের বাধার মুখে পণ্য খালাস করা ভারতীয় ট্রাকগুলো ভারতে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। দেড় ঘণ্টা বন্ধের পর কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে খালি ট্রাকগুলো চলে যায়।

ভারতীয় ট্রাক চালক আশরাফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা গতকালকে আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দরে এসেছি। ভারতীয় আ্যসোসিয়েশন থেকে আমাদের জানানো হয়েছিল যদি ট্রাক খালি না হয় তাহলে যেহেতু ঈদ তাই সকল ড্রাইভারকে নিজ দেশে ফেরত নিয়ে যাবে। কিন্তু গতকাল আমাদের ট্রাক থেকে পণ্য খালি হয়নি। সে মোতাবেক বন্দরে ট্রাক রেখে আমাদেরকে বন্দর কর্তৃপক্ষ বের করে দিয়েছে ভারতে ঈদ করতে যাওয়ার জন্য। কিন্তু ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে এখন পর্যন্ত নেওয়ার জন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। সে কারণে আমরা চালকরা এখানে অবস্থান নিয়েছি। আমরা মুসলমান চালক, আমরাতো ঈদের নামাজ আদায় করবো। আমাদের জন্য পরিবার পরিজন অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু এদেশে তো আমরা ঈদ করতে পারবো না। এর উপর আমাদের এখানে তো কিছুই নেই। যেহেতু লকডাউন চলছে সেটার কারণে আমরা বন্দরের বাইরে যেতে পারি না। তাই আমাদেরকে যেন দ্রুত ভারতে ফিরিয়ে নেওয়া হয় এই দাবি জানাচ্ছি।

অপর ট্রাক চালক সিদ্দিক হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ১১ মে ভারত থেকে আমদানিকৃত গম নিয়ে হিলি স্থলবন্দরে আসি। কিন্তু আমরা বলেছিলাম যে ঈদের কারণে পণ্য খালাস হবে না। কিন্তু রফতানিকারকরা বলেছিলো খালাস হয়ে যাবে, যদিও এখনও হয়নি। এর কারণে বন্দরের ভেতরে শতাধিক ট্রাকের ড্রাইভার আটকা পড়ে রয়েছি। এর মধ্যে আমাদের মতো মুসলিম ড্রাইভার আছে আবার অনেক হিন্দু ড্রাইভার আছে। আমি যে সারা মাস ধরে রোজা রাখলাম কিন্তু ঈদের নামাজ না পড়তে পারি তাহলে কেমন দেখায়। এর উপর করোনার কারণে বন্দরের ভেতরে যে নামাজ আদায় করবো সে ব্যবস্থা নেই। বন্দর এলাকায় কোন দোকানপাট নেই। যেসব চালক রয়েছে তারা খাবে কী? আমাদের দাবি, পরিবার পরিজনের সঙ্গে ঈদ করতে দেওয়ার জন্য ভারতে যেতে দেওয়া হোক।

বাংলাহিলি কাস্টমস সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট আ্যসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল আজিজ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বন্দরে পণ্য খালাস না হওয়ার কারণে আটকে পড়া ভারতীয় ট্রাক চালকদের ভারতে যাওয়ার বিষয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি না হওয়ায় চালকরা যেতে পারছে না। গতকাল তারা অনুমতি দিয়েছিলো কিন্তু রাতে আবার তাদের উচ্চ পর্যায় থেকে সেই অনুমতি বাতিল করে। কিন্তু গতকালের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভারতীয় ট্রাক চালকরা সকাল থেকে সীমান্তের চেকপোস্ট গেটে অবস্থান করতে থাকে। এবিষয়ে আমরা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। তারা নাকি অনুমতি পেয়েছে, হয়তোবা কিছুক্ষণের মধ্যে তারা ভারতে যেতে পারবে।