দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হিলি সীমান্ত, উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি

দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের চেকপোস্ট গেটের শূন্যরেখা। পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেকেই এসেছেন পরিবার পরিজনকে নিয়ে সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে। কেউবা একটু ঘরবন্দি অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সন্তানদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। আবার কেউবা সীমান্তের ওপারে নিজেদের স্বজনের সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশে জড়ো হয়েছেন। তবে সীমান্ত পরিদর্শনে আসা অধিকাংশই কোনওধরনের স্বাস্থ্যবিধি বা মুখে মাস্ক ব্যবহার করছে না।

ঈদের নামাজ শেষে শুক্রবার (১৪ মে) সকাল থেকেই সাধারণ মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে হিলি সীমান্তের চেকপোস্ট গেট এলাকায়। অনেকেই দূর দূরান্ত থেকে প্রাইভেট কার বা মাইক্রোবাস যোগে আবার কেউবা ব্যাটারিচালিত ভ্যান রিকশা, সিএনজি নিয়ে আবার কেউ কেউ মোটরবাইক নিয়ে সীমান্ত পরিদর্শনে এসেছেন। সকলেই হিলি সীমান্তের চেকপোস্ট গেট এলাকা ঘুরে দেখছেন, অনেকে রেললাইনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন।

রংপুর থেকে আসা ইয়াসিন হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমার ফুফার বাড়ি ভারতে সেখানে আমার ফুফাতো ভাইবোন সব রয়েছে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন ইমিগ্রেশন বন্ধ থাকায় ভারতে যেতে পারিনি বা তারাও আসতে পারেনি। তাই মূলত ঈদের সময় তাদের সঙ্গে দেখা করতেই আজকে হিলি সীমান্তে আসা। অনেকের কাছে শুনেছিলাম ঈদে বা পূজার সময় সীমান্তে একটু ছাড় দেওয়া হয়। দু’পাড়ের মানুষজনকে দেখা সাক্ষাৎ করতে বা কথা বলতে সুযোগ দেয়, সে জন্যই এসেছি। কিন্তু এসে দেখি উল্টো চিত্র। সীমান্তের চেকপোস্ট গেট পর্যন্ত যেতে দিলেও এরপরে আর কাউকে বিজিবি যেতে দিচ্ছে না। ফলে তাদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ বা কথা বলার সুযোগ হলো না। তাই সীমান্তের এপার থেকেই চোখ দিয়ে যতটুকু দেখা যায় ও হাতের ইশারায় আমাদের ভাব বিনিময় করলাম।

বগুড়া থেকে দেখতে আসা শরিফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন বাড়ি থেকে কোথাও বের হওয়া হয়নি। এর উপর একমাস রমজান শেষে আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর। তাই এই দিনটিকে একটু উপভোগ করতে বন্ধুদের নিয়ে হিলি সীমান্ত এলাকা দেখতে এসেছি। অনেকের কাছেই শুনেছি দেশের সবচেয়ে নিকটতম সীমান্ত এলাকা তাই দেখতে এসেছি। এসে দেখলাম খুবই নিকটতম সীমান্তবর্তী এলাকা এখানে বিজিবি বিএসএফ একেবারে পাশাপাশি এলাকায় দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করছে। এসব কিছু সত্যিই আমাদের মুগ্ধ করেছে। এর পরে ব্রিটিশ আমলের হিলি রেলস্টেশন যা একেবারে ভারত সীমান্ত ঘেঁষা, এসব দেখতে বেশ ভালো লেগেছে। তাই এই স্মৃতি ধরে আমরা বন্ধুরা মিলে ছবি তুলনাম চেকপোস্ট গেট এলাকায়।

গাইবান্ধা থেকে মোটরবাইকে আসা গৃহবধূ শিউলি রানী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, অল্প কিছুদিন আগেই আমাদের বিয়ে হয়েছে তাই ঈদে খানিকটা বিনোদনের উদ্দেশে হিলিতে এসেছি। যেহেতু করোনার কারণে অন্য কোন পিকনিক স্পট খোলা নেই তাই এখানে আসা।

বিজিবির হিলি আইসিপি চেকপোস্ট কমান্ডার নায়েব সুবেদার ইয়াসিন আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আজ সকাল থেকেই দর্শনার্থীদের সংখ্যা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। অনেকেই দেশের বিভিন্ন দূর দূরান্ত এলাকা থেকে হিলি সীমান্ত এলাকা দেখতে আসছেন। এখানে তারা সীমান্তের চেকপোস্ট গেটে অবস্থিত রেললাইনে দাঁড়িয়ে নিজেদের ছবি তুলছেন, ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আবার অনেকে সীমান্তের নিকট যেতে চাইছেন কিন্তু অনুমতি না থাকায় তাদেরকে সে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। নির্ধারিত এলাকায় দাঁড়িয়ে যতটুকু দেখার তাদেরকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়েছে।