বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর বন্ধ ঘোষণায় পণ্য নিয়ে বিপাকে ট্রাকচালকরা

তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর পাঁচ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণায় বিপাকে পড়েছেন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পণ্য নিয়ে আসা ট্রাকচালকরা। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ও করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের বাসিন্দা, জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে হঠাৎ করেই আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এতে বিপাকে পড়েছেন পণ্যবাহী ট্রাকের চালকরা। পণ্য খালাস, খাবার সংকটসহ নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাদের।

পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে না পারা এবং নিজ এলাকায় ফিরে যেতে না পারায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন ট্রাকচালকরা। থাকা-খাওয়াসহ নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। ভারতে প্রবেশ করে পণ্য খালাস করতে পারবে কিনা সেক্ষেত্রেও কোনও আশ্বাস কিংবা কিছুই জানানো হচ্ছে না তাদের।

সাভার থেকে আসা ট্রাকচালক খোরশেদ আলম বলেন, গত এক সপ্তাহ থেকে বন্দরে বসে আছি, পণ্য খালাস করতে না পারছি না। এখানে খাওয়ার হোটেল নাই, মোবাইল নেটওয়ার্কও নাই। বাড়িতে বা মহাজনের সঙ্গেও যোগাযোগ করবো তার উপায় নেই।

ঢাকার ট্রাকচালক হাসান বলেন, স্থলবন্দর বন্ধ থাকবে, এটা আগে জানালে আমরা গাড়ি নিয়ে আসতাম না। এখানে সাত দিন ধরে আছি, আরও কতদিন থাকতে হবে কে জানে। যে টাকা ছিল তা শেষ, এখন নিরুপায়।

একই কথা জানান দুর্ভোগে পড়া বিল্লাল হোসেন নামে আরেক ট্রাকচালক। তিনি বলেন, পণ্য নিয়ে স্থলবন্দরে ১০ দিন ধরে পড়ে আছি। আমরা না পারছি ভারতের বর্ডার পার হতে, না পারছি ফিরে যেতে। ফলে খেয়ে না খেয়ে দিন যাচ্ছে আমাদের। দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলন ট্রাকচালকদের বিপাকের কথা জানিয়ে বলেন, ভারতীয় করোনা ভ্যারিয়েন্ট ও ফাঙ্গাস সংক্রমণের আশঙ্কায় সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। ট্রাকচালকদের যাবতীয় সমস্যা সমাধান করা হবে বলে জানান তিনি।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের স্থলবন্দর বন্ধ নেই, শুধু আমদানি-রফতানি বন্ধ রয়েছে। দাফতরিক সব কাজকর্ম চলমান রয়েছে।

তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ বন্দরের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় চালকদের নিজ নিজ অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পণ্য খালাস করতে না পারায় অনেক দেশীয় ও ভারতীয় ট্রাক চালকরা যেন একত্রিত হয়ে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াতে না পারে, সেজন্য করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে স্থলবন্দর এলাকায় বিশেষ নজরদারিরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ট্রাকচালকদের সমস্যার বিষয়টি ব্যবসায়ী ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি।