চিনিকলটির কাছে শ্রমিকদের বকেয়া ৫৫ কোটি টাকা

বকেয়া বেতনের দাবিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীরা। বেতন, মজুরি কমিশন, গ্রাচ্যুইটিসহ প্রতিষ্ঠানটির কাছে ৫৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা পাওনা রয়েছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা।

সোমবার (১৪ জুন) সকাল ১০টায় শ্রমিক-কর্মচারীরা চিনিকলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসান হাবিবের কার্যালয় ঘেরাও করে তাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পাওনা মিটিয়ে দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করার পর সেখান থেকে সরে আসেন তারা।

জানা যায়, বর্তমানে দিনাজপুর জেলার একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান
সেতাবগঞ্জ চিনিকল। কয়েক বছর ধরেই অব্যাহতভাবে লোকসান গুনছে এটি। মিল সূত্রে জানা গেছে, গত ছয় মাসে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন আট কোটি ১০ লাখ ৩৫ হাজার, মজুরি কমিশন ১৫ লাখ ২০ হাজার, পিএফ বাবদ ৯ কোটি ৯৮ লাখ ৮০ হাজার, গ্রাচ্যুইটি ১১ কোটি ৫৪ লাখ ৫৭ হাজার, ভ্যাট ও আয়কর
৬৫ লাখ ৭৭ হাজার, জামানত বাবদ এক কোটি ৫৪ লাখ, সরবরাহকারী বিল পাঁচ কোটি ৩৩ লাখ ৮১ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ৫৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকার বকেয়া রয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা না পাওয়ায় অর্থাভাবে নানান ধরনের সমস্যায় পড়েছেন এখানকার শ্রমিক-কর্মচারীরা। বারবার বকেয়া বেতনের দাবি জানালেও কর্তৃপক্ষ তাদের পাওনা পরিশোধ করেনি। এমন অবস্থায় আজ শ্রমিক-কর্মচারীরা একজোট হয়ে চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও করে তাকে অবরুদ্ধ করেন।

কয়েকজন শ্রমিক জানান, চিনিকলটিতে আখ মাড়াই বন্ধ হয়েছে কিন্তু তাদের চাকরি থাকবে কি-না ও বেতন-ভাতা পাবে কি-না এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কিছুই বলছে না। বরাবরের মতো চিনিকলের কর্মকর্তাদের কাছে ধরনা দিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না।

সেতাবগঞ্জ চিনিকলের সিডিএ নেতা তোফাজ্জাল হোসেন তোফা বলেন, গত ছয় মাস ধরে আমাদের পাওনা পরিশোধ করা হচ্ছে না। অর্থ সংকটে সংসার নির্বাহ করা দায় হয়ে পড়েছে। প্রতিটি শ্রমিক পরিবারই এখন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। আমাদের
দাবি শুধু একটাই, দ্রুত সময়ে আমাদের পাওনা পরিশোধ করা হোক।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসান হাবিব জানান, তার চিনিকলে সবমিলিয়ে দেনার পরিমাণ ৫৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। সদরদফতরে
টাকা বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে। টাকা এলেই সব বকেয়া
পরিশোধ করা হবে।