দিনাজপুরে কঠোর লকডাউন ঢিলেঢালা

করোনাভাইরাস সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে মঙ্গলবার (১৫ জুন) সকাল ৬টা থেকে দিনাজপুর সদরে শুরু হয়েছে সাত দিনের কঠোর লকডাউন। জেলা প্রশাসনের জারি করা এই লকডাউন চলবে আগামী ২১ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত।

তবে কঠোর এ লকডাউনে মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, কার-মাইক্রোবাসসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল এবং ওষুধ ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া দোকানপাট বন্ধের ঘোষণা থাকলে বাস্তব চিত্র ভিন্ন। সকাল থেকে দিনাজপুর শহর ও আশপাশের রাস্তাঘাটে যানচলাচল স্বাভাবিকই রয়েছে। আদেশ অমান্য করে খোলা হয়েছে অত্যাবশ্যকীয় ছাড়াও অনেক দোকানপাট। মাস্ক ছাড়াই অনেককে ঘোরাফেরাও করতে দেখা গেছে।

এমন অবস্থা চললেও শহরের কলেজ মোড় ছাড়া কোথাও প্রশাসনের তৎপরতা চোখে পড়েনি। শহরের চিত্র দেখে যে কেউই বলে দেবে, এ যেন কঠোর লকডাউনের ঢিলেঢালা শুরু।

dinajpur (2)

শহরের বড়বন্দর এলাকায় অনেক দোকানপাটই খোলা দেখা গেছে। একই অবস্থা কালিতলা মোড় এলাকায়ও। শহরের চারুবাবুর মোড়, মডার্ন মোড়, লিলি মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় দোকানপাট তেমন খোলা না থাকলেও স্বাভাবিক রয়েছে যানচলাচল। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল, সাইকেল ও মানুষের সমাগম দেখলে বোঝার উপায় নেই কোথাও লকডাউন আছে।

শহরের বাইরের অবস্থা আরও নাজুক। গোপালগঞ্জ বাজার, বটতলী, সুইহারী, চৌরঙ্গী মোড়, গুঞ্জাবাড়ী, রাজবাড়ী, গাবুড়া বাজারসহ সবখানেই মানুষের অবাধ চলাচল দেখা গেছে। খোলা রয়েছে দোকানপাটও। অনেকেই জানেনই না যে এ উপজেলায় লকডাউন চলছে।

শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে এক মোটরসাইকেল আরোহীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি শুধু বলেন, ‘খুব জরুরি কাজে বের হয়েছি ভাই’। এ বলেই তিনি স্থান ত্যাগ করেন।

এক অটোরিকশাচালক বলেন, ‘গরিব মানুষ, কয়টা টাকা রোজগারের আশায় বের হয়েছি। সবাই চলাচল করছে, এই সাহসে আমিও বের হয়েছি।’ রাস্তায় কেউ আটক করেছিলো কি-না, জবাবে তিনি বলেন, ‘কই নাতো!’

dinajpur (3)

গোপালগঞ্জ বাজারে কথা হয় শরিফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘লকডাউন চলছে এটা শুনেছি। কিন্তু মাইকিং শুনিনি তাই বিশ্বাস করিনি। বাইরে এসেও তো দেখছি না লকডাউন কোথায়।’

লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ থাকবে এ জন্য সকাল সকাল বাজার করতে বের হয়েছেন রিয়াজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘লকডাউন নাকি হবে, এ জন্য বাজার করতে বের হয়েছি। কখন আবার সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়।’

চারুবাবুর মোড় এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক সুসেন রায় বলেন, ‘লকডাউন চলছে তো কী হয়েছে? খাবো কী এই ভেবে বের হয়েছি। রাস্তায় যখন দেখি সবাই চলাচল করছে তখন আমার চলাচল করতে দোষ কোথায়?’

আরেকজন বলেন, ‘আপনাদের সমস্যা কোথায়। কেউ যখন মানছে না তখন আমাদের মেনে কী হবে! বাড়িতে কি খাবার পৌঁছে দেবে কেউ, তাই বের হয়েছি।’

সার্বিক বিষয়ে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী বলেন, ‘কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা অভিযান শুরু করবো।’