উপবৃত্তির টাকার জন্য শিক্ষার্থীদের বাবা সেজেছেন প্রধান শিক্ষক

কুড়িগ্রামের উলিপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপবৃত্তির জন্য বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে তালিকায় শিক্ষার্থীদের বাবা হিসেবে প্রধান শিক্ষকের নাম ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে উপবৃত্তির তালিকায় কয়েকজন শিক্ষার্থীর মায়ের নামের স্থলে প্রধান শিক্ষকের স্ত্রীর নাম এবং একাধিক শিক্ষার্থীর ভাই পরিচয়ে প্রধান শিক্ষকের ছেলের নাম ব্যবহার করা হয়েছে।

এছাড়াও শিক্ষার্থীদের অভিভাবক হিসেবে তার দুই শ্যালকের নামও ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় সুবিধাবঞ্চিত এক অভিভাবক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নাম মাহাবুবার রহমান। তিনি উপজেলার ধরনীবাড়ি ইউনিয়নের মাদারটারী পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৬ সাল থেকে উপজেলার মাদারটারী পূর্ব পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাহাবুবার রহমান প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিদ্যালয়ে নিজের পক্ষের লোকজন দিয়ে পকেট কমিটি করে স্লিপ, প্রাক-প্রাথমিক ও রুটিন মেইনটেন্যান্স প্রকল্পের টাকা নয়-ছয় করে আসছেন।

চলতি বছর জানুয়ারিতে সরকার ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তির টাকা বরাদ্দ দিলে প্রকৃত শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করে প্রধান শিক্ষক তালিকায় ৯১, ১২৮, ১২৯, ১৬৯, ১৭৪, ২১৫ নম্বর ক্রমিকের শিক্ষার্থীদের বাবা, ৫৯ নম্বর শিক্ষার্থীর চাচা হিসেবে নিজের নাম ব্যবহার করেছেন। এছাড়া ১০৪, ১৬৮, ২১২ নম্বর শিক্ষার্থীর মা হিসেবে তার স্ত্রী সাবিনা বেগম, ১৩০ ও ১৩২ ক্রমিকের শিক্ষার্থীর ভাই এবং ৭ নম্বর ক্রমিকের শিক্ষার্থীর বাবা হিসেবে প্রধান শিক্ষকের ছেলে সাদেকুলের নাম ব্যবহার করা হয়।

এছাড়া প্রধান শিক্ষকের দুই শ্যালক মাইনুল ও মেহেদীকে কয়েকজন শিক্ষার্থীর ভাই, চাচা ও বাবা হিসেবে তালিকায় নাম দেখানো হয়েছে।

জানা গেছে, কিট এলাউন্সসহ ১৭ শিক্ষার্থীর নামে বরাদ্দ হওয়া প্রায় ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন মাহাবুবার রহমান। এছাড়া করোনাকালে শিক্ষার্থীদের অনুকূলে বরাদ্দকৃত স্কুল ফিডিংয়ের বিস্কুট বিতরণের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মাহাবুবার রহমান বলেন, ‘আসলে বিষয়টি সেরকম না, সাক্ষাতে বললে বুঝতে পারবেন।’ তবে তালিকায় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের নামের স্থলে তার ও স্ত্রী-পুত্রের নাম ব্যবহারের বিষয়ে তিনি কোনও সদুত্তর দেননি।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাদিরুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।