হিলি সীমান্তে দর্শনার্থীদের ভিড়, স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই

করোনাকালেও ঈদ উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত এলাকায় ভিড় করছেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দর্শনার্থীরা। কেউ কেউ অনুমতি নিয়ে সীমান্তের ওপারে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলছেন। তবে সীমান্তে বেড়াতে আসা অধিকাংশের মুখে মাস্ক দেখা ছিল না।

প্রতিবছর ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে হিলি সীমান্ত এলাকা দেখতে ভিড় করেন দর্শনার্থীরা। করোনা মহামারির মাঝেও বুধবার (২১ জুলাই) বিকাল থেকে হিলি সীমান্ত দেখতে আসলেও, আজকে সেই সংখ্যা অনেকটা বেড়ে গেছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, ভ্যান-রিকশা, ইজিবাইক যোগে মানুষজন আসছেন হিলি সীমান্তসহ প্রাচীনতম রেলস্টেশন এলাকা দেখতে। একইভাবে ভারত অংশে অনেকে আসছেন বাংলাদেশি স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে।

হিলি সীমান্ত এলাকায় আসা রবিন হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ ১৮ জন বন্ধু বাইকে হিলি সীমান্তসহ বিভিন্ন এলাকা ভ্রমণে বের হয়েছি। দুপুরের দিকে সবাই হিলিতে পৌঁছেছি। আমরা সীমান্ত সংলগ্ন চেকপোস্ট গেট এলাকা পরিদর্শন করলাম, সেখানে বন্ধুরা মিলে ছবি তুলেছি। এর পর সীমান্তের পাশে থাকা রেললাইনে ঘোরাঘুরি করলাম এবং প্রাচীনতম হিলি রেলস্টেশন এলাকা দেখলাম। সবমিলিয়ে আমরা খুব মজা করলাম। আমাদের ওখানে সীমান্ত এলাকা রয়েছে, কিন্তু হিলির মতো এত কাছাকাছি নেই।’

স্বাস্থ্যবিধি মানার আগ্রহ নেই দর্শনার্থীদের

সৈয়দপুর থেকে আসা পুষ্পা রানী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের অনেক আত্মীয়-স্বজন ভারতে রয়েছেন। কিন্তু করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে পাসপোর্টে যাতায়াত বন্ধ। তাই আমরা যেমন তাদের সাথে দেখা করতে পারিনি, তেমনি তারাও আমাদের সাথে দেখা করতে পারেননি। আমরা শুনেছিলাম ঈদের সময় সীমান্তে একটু ছাড় দেয়। সেজন্য আজকে হিলিতে এসেছি। আমাদের মতো তারাও এসেছে সীমান্তের ওপারে, তবে বিজিবি একেবারে সীমান্তের খুব কাছাকাছি আমাদের যেতে দেয়নি। তারপরও দূর থেকে যতটুকু তাদের সাথে চোখে চোখ মিলিয়ে, মনের ভাব আদান-প্রদান করতে পারলাম। একটু দূর থেকে হলেও চোখের দেখা দেখতে পারলাম।’
 
গাইবান্ধা থেকে আসা গৃহবধূ শিউলি আকতার বলেন, ‘আমার বাবার বাড়ি ভারতে। বেশ কিছুদিন আগে গাইবান্ধায় বিয়ে হয়েছে। করোনার কারণে পাসপোর্ট যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকায় ভারতে যেতে পারিনি বাবা-মার সাথে দেখা করতে বা তারাও আসতে পারেনি। তাই ঈদের ভেতরে দেখা করতে স্বামীকে সাথে নিয়ে আজকে হিলিতে চলে এসেছি। পরে বিজিবিকে অনেক অনুরোধ করে তারা কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছিল। দীর্ঘদিন পর মন খুলে আমার বাবা-মার সাথে কথা বলতে পারলাম। দেখতেও পারলাম।’

সীমান্তসহ প্রাচীনতম রেলস্টেশন এলাকা দেখতে আসছেন অনেকে

বিজিবির হিলি আইসিপি চেকপোস্ট কমান্ডার নায়েব সুবেদার ইয়াসিন আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রতিবছর ঈদ বা বিভিন্ন উৎসবে হিলি সীমান্ত এলাকায় দর্শনার্থীদের ভিড় থাকে। গতকাল বিকালের দিকে সীমান্ত দেখতে আসা কিছু মানুষের ভিড় ছিল। তবে তার তুলনায় আজকে মানুষের উপস্থিতি বেশি। তারা সীমান্তের পার্শ্বে চেকপোস্ট গেটে দাঁড়িয়ে দেখছে, ছবি তুলছে। এছাড়া কেউ কেউ আসছে ভারতে থাকা স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে। অনেক সময় দীর্ঘদিন পর পরিবারের সাথে দেখা করতে আসায় মানবিক কারণে তাদের মধ্যে দুই-একজনকে সেই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, তবে সেটা সব সময় নয়।’