রংপুর মেডিক্যালে একদিনে ১৫ মৃত্যু

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার উপসর্গ নিয়ে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (৩০ জুলাই) বিষয়টি হাসপাতালের একটি সূত্র নিশ্চিত করলেও পরিচালকসহ কেউই এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। বরং করোনায় ও উপসর্গে মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমকর্মীদের না দেওয়ায় ‌‘অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা’ জারি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মৃত্যু নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গণমাধ্যমকে তথ্য না দেওয়ার ঘটনাকে ‌‘লুকোচুরি খেলা’ বলে অভিহিত করেছে করোনা প্রতিরোধ কমিটিসহ বিভিন্ন সংগঠন। 

রংপুর জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ খায়রুল আনাম বলেছেন, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাংবাদিকদের তথ্য না দিয়ে লুকানোর প্রবণতা দুঃখজনক। 

সিপিবির উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদত হোসেন বলেন, হাসপাতালটিতে এমনিতেই চিকিৎসা দেওয়ার নামে প্রহসন চলছে, তার ওপর তথ্য গোপন করা গুরুতর অপরাধ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে তিন জন নারী ও ১২ জন পুরুষ। তাদের অধিকাংশের বয়স ৫০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে। 

হাসপাতালের একটি রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে যেসব রোগী মারা যান, তাদের নাম-ঠিকানা সংবলিত কাগজ তাদের কাছে আসে। কিন্তু মৃতদের নাম-ঠিকানা গণমাধ্যমকর্মীদের না দেওয়ার নির্দেশনা থাকায় আমরা দিতে পারি না।’

এ ব্যাপারে রংপুর মেডিক্যালের পরিচালক ডা. রেজাউল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার কোনও তথ্য তার কাছে নেই। 

করোনায় ও উপসর্গে মৃতদের তথ্য কেন গণমাধ্যমকর্মীদের দেওয়া হচ্ছে না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনও কথা বলেননি। তবে তিনি বলেন, হাসপাতালে প্রতিদিন অনেকেই মারা যাচ্ছে এটা ঠিক।

এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বিশেষায়িত চিকিৎসা কেন্দ্র রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রংপুর বিভাগের আট জেলাসহ আরও অন্য জেলা থেকে চিকিৎসা নিতে আসে রোগীরা। হাসপাতালের বেড সংখ্যা কাগজ-কলমে এক হাজার হলেও বাস্তবে সেখানে রোগী থাকে দুই থেকে আড়াই হাজার। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। 

রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. মোতাহারুল ইসলাম বলেন, তিনি কয়েক দিন আগে কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। তারপরও বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানান।