দম্পতিকে এক ঘরে করে: আদালতে ‘মিস কেস’

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদীঘি ইউনিয়নের ছলিমনগর গ্রামে এক দম্পতিকে এক ঘরে করে রাখার ঘটনায় জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিস কেস দায়ের করা হয়েছে।

পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মতিউর রহমান কোট অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউরের ১৯১ (১) সি ধারায় মামলাটি আমলে নেন। গত ১১ আগস্ট ওই আদালতে মামলাটি করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, এক ঘরে করে রাখার বিষয়টি গত ১১ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ‘তালাকের জের ধরে সমাজপতিরা দরিদ্র এক দম্পতিকে এক ঘরে করে রেখেছে’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি আমলে গ্রহণ করেন আদালত। বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে আগামী ২২ আগস্ট ওই আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।

আদালতের আদেশনামায় বলা হয়েছে, এ সংক্রান্ত সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। মুসলিমদের বিয়ে ও তালাক হয় ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী। শরিয়াহ আইনের মূল ভিত্তি হলো কোরআন ও সহিহ হাদিস। কোরআন ও সহিহ হাদিসের নির্ধারিত বিধিবিধানের আলোকে একজন মুসলিম এক বৈঠকে বা একসঙ্গে একাধিকবার তালাক শব্দটি উচ্চারণ করলেও তা এক তালাক হিসেবে গণ্য হবে। কখনও তিন তালাক হবে না। এক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর পুনরায় আপস-সমঝোতায় পুনরায় বিবাহ ছাড়াই সংসার করতে বাধা থাকবে না।

অথচ আলোচ্য ঘটনায় দেখা যাচ্ছে, দেবীগঞ্জ উপজেলার ৫নং সুন্দরদীঘি ইউনিয়নের ছলিমনগর গ্রামের স্থানীয় সমাজপতি ও ধর্মীয় নেতারা মনগড়া ফতোয়া জারি করে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ওই দম্পতিকে চার মাস ধরে এক ঘরে করে রেখেছে। উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী যা গুরুতর অপরাধ।

দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জামাল হোসেন বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনার বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনও হাতে কোনও কাগজ পাইনি। নির্দেশনা পেলে নির্দিষ্ট সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’