ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আনছেন না আমদানিকারকরা

দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের দাম কমে যাওয়ায় ভারত থেকে নিত্য এ পণ্যটি আমদানি বন্ধ রেখেছেন দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা। বন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের দাম ব্যাপক হারে বেড়ে গেলে দীর্ঘ আট মাস পর ১৪ আগস্ট দুইটি ট্রাকে ২৩ হাজার ৫৬২ কেজি কাঁচা মরিচ আমদানি করা হয়। ১৬ আগস্ট আরেকটি ট্রাকে ১৩ হাজার ২২৪ কেজি কাঁচা মরিচ আনা হয় প্রতিবেশী দেশটি থেকে। তবে দেশের বাজারে দাম কমে যাওয়ায় এরপর থেকে এ বন্দরে পণ্যটি আমদানি বন্ধ রয়েছে।

বন্দরের কাঁচা মরিচ আমদানিকারক আনোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে দেশে কাঁচা মরিচের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় এবং সরবরাহ কমায় দাম বেড়ে অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি হয়। এমন অবস্থায় দেশে কাঁচা মরিচের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে আমদানির অনুমতি ও আইপি প্রদান শুরু করে সরকার। ১৪ আগস্ট থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু হয়। ভারতের কানপুর থেকে প্রতি টন কাঁচা মরিচ ৩০০ মার্কিন ডলার (২৫,৫০০ টাকা) মূল্যে দেশে আমদানি করা হয়। কেজি পড়েছে ২৫ টাকা করে। এর সঙ্গে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ দেশের বন্দর পর্যন্ত আসতে পরিবহন খরচ বাবদ কেজি প্রতি ২৫ টাকা করে খরচ পড়েছে, এরপর আমদানি করা মরিচের কেজি প্রতি শুল্ক পরিশোধ করতে হচ্ছে ২৫ টাকা ৫০ পয়সা। এতে প্রতি কেজি মরিচের দাম ৭৫ থেকে ৭৬ টাকা পড়েছে। এছাড়া পণ্যের ঘাটতি, পচে নষ্ট হওয়ার বিষয়তো রয়েছে। সবমিলিয়ে, আমদানি করা এসব কাঁচা মরিচ মান ভালো থাকলে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি হলে কিছুটা লাভ হতো। কিন্তু প্রথম দিনে আমদানি হওয়া মরিচ বন্দরে ক্রেতা না থাকায় তা বিক্রির জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রামে পাঠানো হলে সর্বোচ্চ ৬০ ও সর্বনিম্ন ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘১৬ আগস্ট আসা মরিচ ঢাকায় বিক্রি করা হয় ৬০ টাকা কেজি দরে। এতে কয়েক লাখ টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। একইভাবে প্রথমদিকে দেশের বাজারে যেভাবে আমদানি করা কাঁচা মরিচের চাহিদা ও দাম ছিলে এখন সেরকম চাহিদা নেই। বর্তমানে দেশীয় কাঁচা মরিচ ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে কাঁচা মরিচ আমদানিতে পড়তা না থাকায় ও বিপুল পরিমাণ লোকসান গুনতে হওয়ায় পণ্যটি আমদানি বন্ধ রেখেছেন আমদানিকারকরা। যদি আবারও দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের দাম ও চাহিদা বাড়ে তখন বন্দর দিয়ে ফের মরিচ আমদানি করা হবে।’

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বন্দর দিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি বন্ধ ছিল। তবে ১৪ আগস্ট থেকে আমদানি শুরু হয়। দুই দিন তিন ট্রাকে কাঁচা মরিচ এলেও এরপর আবারও  আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। ১৬ আগস্টের পর আর কোনও কাঁচা মরিচবাহী ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করেনি।’