ঘোড়ার মাংস খাওয়ায় মামলা, বাদী পুলিশ কর্মকর্তাকে তিরস্কার 

পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের চৌধুরী হাটে ঘোড়ার মাংস খাওয়ার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের অব্যাহতি দিয়েছেন পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আদালতের বিচারক মামলার এজাহারকারী ও বোদা থানার উপ-পরিদর্শক লিপন কুমার বসাক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক জাহিদুল ইসলামকে তিরস্কার করেছেন। 

একই সঙ্গে বোদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমান ও বোদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুস সোবহানকে দায়িত্ব পালনে আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৫ আগস্ট) আদালতের বিচারক মো. মতিউর রহমান এ আদেশ দেন।

আদালতের আদেশ থেকে জানা যায়, ঘোড়ার মাংস খাওয়া হালাল সত্ত্বেও বিনা অপরাধে মো. সানাউল্লাহ (৩২) ও হামিদুর রহমানের (৩৩) বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (গ) ও পেনাল কোডের ২৭৩ ধারায় এজাহার দায়ের করায় উপ-পরিদর্শক লিপন কুমার বসাককে এবং মামলার তদন্তে গাফিলতি পরিলক্ষিত হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক জাহিদুল ইসলামকে তিরস্কার করা হয়। ভবিষ্যতে মামলা তদন্তকালে নিজ দায়িত্ব পালনে সজাগ থাকতে সতর্ক করা হয় তাদের।

আদেশে আরও বলা হয়, আসামিরা ঘোড়ার মাংস হালাল মনে করে খাওয়ার জন্য জবাই করেছিলেন। একাধিক হাদিস শরিফে ঘোড়ার মাংস হালাল মর্মে উল্লেখ আছে। সেহেতু আসামিদের কাজ অন্যায় মর্মে প্রতীয়মান হয় না। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ ডিসেম্বর বোদা উপজেলার কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের চৌধুরীহাটে ঘোড়া জবাই করার অভিযোগে মো. সানাউল্লাহ (৩২) ও হামিদুর রহমানকে (৩৩) আটক করা হয়। এ সময় ৩৫ কেজি ঘোড়ার মাংসও জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মাংস থেকে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে বাকি মাংস বোদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহারিয়ার রহমানের উপস্থিতিতে মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। পরদিন বোদা থানার এসআই লিপন কুমার বসাক বাদী হয়ে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন। মামলায় দুই যুবককে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলাহাজতে পাঠানো হয়। সাত দিন হাজতবাসের পর ২৯ ডিসেম্বর আদালত থেকে তারা জামিনে মুক্ত হন। ওই দিনই আদালত ঘোড়ার মাংস হালাল নাকি হারাম তা ব্যাখ্যাপূর্বক বাদীসহ সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহারিয়ার রহমানকে প্রতিবেদন দিতে বলেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম চলতি বছরের ৩০ জুলাই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।