আমরা সমাজের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছি: ব্যারিস্টার সুমন

দিনাজপুরে বজ্রপাতে নিহত চার শিশু-কিশোরের পরিবারকে সহযোগিতা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে দিনাজপুর শহরের ৮নং নিউটাউন রেলঘুন্টি এলাকায় বজ্রপাতে নিহত চারজনের বাড়িতে যান তিনি। এ সময় তিনি পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিয়ে তিনজনের পরিবারকে একটি করে সেলাই মেশিন ও একজনের পরিবারকে দোকানঘর নির্মাণের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

তিনি বলেন, ‘ফুটবল খেলতে গিয়ে চারজন মারা গেছে। এই সংবাদ গণমাধ্যমে দেখে আমি এখানে এসেছি। যেহেতু নিজেই আমি ফুটবলের সংগঠক তাই এসেছি। আমি উদাহরণ তৈরি করতে চাই, কেউ বিপদে পড়লে একজন আরেকজনের জন্য ধাবিত হবে। আমার এলাকার মানুষকে সহায়তার জন্য হয়তো দিনাজপুরের মানুষ এগিয়ে যাবে। তরুণদের জন্য আমি মানবিকতার একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন ও উদাহরণ তৈরি করতে চাই। আমাদের লুটপাটের অনেক বেশি উদাহরণ তৈরি হয়েছে। কে কত বেশি লুটপাট করতে পারে, এটার একটি উদাহরণ তৈরি হয়ে আমরা সমাজের বারোটা বাজাই দিছি। আমি একক, আমি চাইলে সারাদেশ বদলে দিতে পারবো না। আমি চাচ্ছি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেখিয়ে দিতে, চারটি বাচ্চার মা ও তার পরিবারকে সহানুভূতি দেখানোর জন্য আমি ১১ ঘণ্টা ড্রাইভ করে এখানে এসেছি।’

barrister-sumon2

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘এটা এমন না যে, আমার টাকায় তারা ধনী হয়ে যাবে। শুধু উদাহরণ তৈরি করতে চাই, মানুষের প্রয়োজনে মানুষ দাঁড়াবে। শুধু লুটপাটকারীদের মানুষ অনুসরণ করবে না। মানবিক মানুষকেও মানুষ অনুসরণ করবে। এ জন্য আমাদের তরুণদেরকে আমরা মানবিক মানুষ হিসেবে তৈরি করতে চাই। আমার ভিডিও দেখে যদি ১০টা লোকও মনে করে, আমি কোনও কারণে মানুষের পাশে দাঁড়াবো, তাহলে আমার ২২ ঘণ্টার ভ্রমণ সার্থক হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের আইন সম্পাদক পদে ছিলাম। কিছুদিন আগে আমার দল থেকে আমাকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এটা দলীয় বিষয়। আমি সবসময় বলেছি, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। দলের যারা নেতৃবৃন্দ আছেন, তারা যদি মনে করেন কোনও একজনকে দূরে রাখবেন, আমার মনের মধ্যে কোনও কষ্ট নেই। ব্যক্তির কোরবানি হয়ে যাবে তবু দল ভালো থাকবে, দল কোরবানি হয়ে যাবে তবু দেশ ভালো থাকবে। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, এর জন্য আমাকে কোনও দল করা লাগবে না।’

উল্লেখ্য, সোমবার (২৩ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৩টায় ওই এলাকার ফুটবল খেলার মাঠের পাশে একটি ছাউনিতে আশ্রয় নেওয়া সাত শিশু-কিশোরের ওপর বজ্রাঘাতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আপন (১৬), মিম (১০), হাসান (১২) ও সাজ্জাদ (১৩) মারা যায়। মমিনুল (১৬), আতিক (১৬) ও সাজু (১৫) নামের আরও তিনজন আহত হয়।