গাইবান্ধায় রিকশাচালক হত্যার ঘটনায় দুই ভাই কারাগারে

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় রিকশাচালক ছকু মিয়া হত্যা মামলায় মন্টু মিয়া ও রনজু মিয়া নামে আপন দুই ভাইকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মঙ্গলববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে গাইবান্ধা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আশিকুল খবির শুনানি শেষে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। মন্টু ও রনজু সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের পূর্ব দামোদরপুর গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিনের ছেলে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ছকু হত্যা মামলার আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করে। কিন্তু হত্যার ঘটনাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এই মামলায় আলমগীরসহ তিন আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছেন।

ছেলের প্রেমের খেসারত দিলেন রিকশাচালক বাবা, শেষ দেখা হলো না

গত ১৬ জুন ছকু মিয়াকে হত্যার অভিযোগে গাইবান্ধার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে (সাদুল্লাপুর) মামলা করেন তার ছেলে মোজাম্মেল হক। মামলায় পূর্ব দামোদরপুর গ্রামের ছয় ভাই আলমগীর, আঙ্গুর, রনজু, মনজু, সনজু ও মন্টু মিয়াসহ ৯ জনকে আসামি করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে সাদুল্লাপুর থানায় মামলা রেকর্ডভুক্ত করাসহ গত ২১ জুন কবর থেকে ছকু মিয়ার লাশ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। 

এ রআগে ছকু মিয়ার পারিবারিক ও দাদনের টাকা নিয়ে বিরোধ ছিল আলমগীর ও মন্টু মিয়াসহ তার ভাইদের। মন্টুর মেয়ের সঙ্গে ছকু মিয়ার ছেলে মোজাম্মেলের প্রেমের সম্পর্ক থাকায় তাদের বিরোধ আরও বাড়ে। এক পর্যায়ে গত ১৫ মে সন্ধ্যায় ছকু মিয়াকে আটক করে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রাতভর অমানবিক নির্যাতন চালায় আলমগীর ও মন্টুসহ তার ছয় ভাই।

পরে এই ঘটনায় দামোদরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাজেদুল ইসলাম স্বাধীনের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকে ‘ছেলের প্রেমের খেসারত' হিসেবে ছকু মিয়াকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই টাকার জন্য ছকুর একমাত্র ঘরটিও ১৫ হাজারে বিক্রি করে দিতে হয়। এরপর ওই টাকা সংগ্রহে গাজীপুরের শ্রীপুরে রিকশা চালাতে গিয়ে ৩ জুন মৃত্যু হয় ছকু মিয়ার।