টানা ৪ দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায়

উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত। মাঘের প্রথম দিন থেকে কমছে তাপমাত্রা। সেই সঙ্গে কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে দুর্ভোগ বেড়েছে। সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া উপজেলায় সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। 

গত রবি ও শনিবার ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এর আগের দিনও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায়। মাঘ মাসে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। এদিকে তীব্র শীতে গ্রামের মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। কাজ না পেয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ।

বোদা পৌরসভার সাতখামার গ্রামের দিনমজুর ফারুক হোসেন (৪০) জানান, ভাঙা বেড়ার ঘরে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করি। লেপ-তোশক নেই। খড় ও চটের বিছানায় থাকি। রাতে বাতাস একদিক দিয়ে ঢুকে অন্যদিক দিয়ে বের হয়ে যায়। আমাদের কষ্ট কেউ বোঝে না। 

একই এলাকার আবুল হোসেন জানান, দিন আনে দিন খাই। কাজ না পেলে খাবারের ব্যবস্থার কোনও উপায় নেই। আমরা না পেলাম কম্বল না পেলাম ঘরবাড়ি। কাজ খুঁজবো না মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরবো! আমাদের কেউ নেই আল্লাহ আছে। 

বোদা পৌরসভার মাস্টারপাড়া এলাকার গোলাপী বেগম বলেন, শীতে কাঁবু হয়ে গেছি। না পেলাম কম্বল, না পেলাম ঘরবাড়ি। শীতে খুব কষ্ট হয়।

জেলা সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের মীরগড় এলাকার পাথর ও বালুশ্রমিক এরশাদ আলী জানান, শীতের সকালে বরফ ঠান্ডা পানিতে নেমে পাথর ও বালু তুলতে হয়। জীবনের তাগিদে সবকিছুই করতে হয়। শীতকে ভয় করলে কি চলবে?

জেলা শহরের ক্ষুদ্র চা দোকানদার নুর আলম জানান, প্রতিদিন সকালে দোকান খুলতে হয়। ঠান্ডায় যাতায়াত করা কষ্ট। তবুও প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়।

জেলায় সাড়ে তিন লক্ষাধিক শীতার্ত মানুষ। তাদের মধ্যে জেলা প্রশাসন প্রায় ৩৪ হাজার মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন। পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও শীতার্তদের জন্য এগিয়ে এসেছেন। 

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র পর্যবেক্ষক জীতেন্দ্রনাথ রায় জানান, সোমবার সকাল ৯টায় ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শৈত্যপ্রবাহ থাকায় ঠান্ডা বেড়েছে। আগামী তিন থেকে চার দিন তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পড়ুন:
আবহাওয়ার আরও খবর। 
তাপমাত্রার আরও খবর।