ছেলের গোয়ালঘরে থাকা সেই বৃদ্ধাকে নতুন ঘর বানিয়ে দিলো র‍্যাব

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণি ইউনিয়নের সুরিরডারা গ্রামে ছোট ছেলের গোয়ালঘরে মায়ের বসবাস সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর ওই বৃদ্ধার পাশে দাঁড়িয়েছে র‌্যাব-১৩ রংপুর। বাহিনীটির পক্ষ থেকে মহেছেনাকে নতুন একটি ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে শীতবস্ত্র পেয়েছেন মহেছেনা। 

শনিবার (২৯ জানুয়ারি) ঘরের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-১৩ রংপুরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ফ্লাইট লে. মাহমুদ বশির আহমেদ।

মহেছেনার বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণি ইউনিয়নের সুরিরডারা গ্রামে। ওই গ্রামের ইমান আলীর স্ত্রী তিনি। তবে স্বামী ছেড়ে চলে যাওয়ায় অসহায় জীবনযাপন করছেন এই বৃদ্ধা। থাকার ঘর না থাকায় এই শীতে ছোট ছেলের গোয়ালঘরে নাতিসহ (বড় ছেলের সন্তান) বসবাস করতেন। এ নিয়ে গত ২৫ জানুয়ারি বাংলা ট্রিবিউনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়

মাহমুদ বশির আহমেদ বলেন, 'ছেলের গোয়ালঘরে বৃদ্ধা মায়ের বসবাস' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পর তা আমাদের অধিনায়ক কমান্ডার রেজা আহমেদ ফেদৌসের নজরে আসে। পরে তিনি বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিতে ভুক্তভোগীর বাড়িতে লোক পাঠান। সবকিছু জানার পর বাহিনীর পক্ষ থেকে ওই নারীকে নতুন একটি ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। আশা করছি তার কষ্ট অনেকটাই লাঘব হবে।

মহেছেনার বাড়িতে ঘর নির্মাণে সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন র‌্যাব-১৩ এর ডিডি মজুন শেখ। তিনি বলেন, ‘মহেছেনাকে ২২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। মাত্র দুই দিনে সিমেন্টের খুঁটি ও টিন দিয়ে এই ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা তাকে শীতবস্ত্র হিসেবে দুটি কম্বলও দিয়েছি। ঘর আর কম্বল পেয়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন মহেছেনা।’

নতুন টিনের ঘর পেয়ে র‌্যাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সঙ্গে দোয়া করেছেন মহেছেনা। তিনি জানান, এত দ্রুত সময়ে তার ভাগ্যে নতুন ঘর জুটবে তা কল্পনাও করতে পারেননি। র‌্যাবের জন্য প্রাণ ভরে দোয়া থাকবে তার।

মহেছেনা বলেন,‘ মুই খুব খুশি বাবা। র‌্যাব মোর কষ্ট দূর করিল। এই শীতত নাতিক নিয়া এখনা আরামে থাকপার পাইম। আল্লাহ সবার ভালো করুক।’

মহেছেনার জন্য ঘর তৈরি জন্য অর্থ সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও সংগঠক মারুফ আহমেদ। তিনি র‌্যাবের এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘এটা অসাধারণ একটি উদ্যোগ। কোনও অসহায়ের পাশে এভাবে দাঁড়ানোটা নি:সন্দেহে মানবিকতার দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ। ওই নারীর দীর্ঘ দিনের কষ্ট মাত্র দুই দিনে দূর হলো। র‌্যাবের জন্য শুভ কামনা।’ মহেছেনা ও নাতির জন্য বিভিন্ন সুহৃদের দেওয়া অর্থ দিয়ে তাদের (মহেছেনা ও তার নাতির) অন্যান্য প্রয়োজন মেটানো হবে বলেও জানান মারুফ।