এনজিও কর্মীর বিরুদ্ধে গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত অপর্ণা কুবি নামে এক নারীর বিরুদ্ধে গৃহকর্মীকে (১২) নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ভাড়া বাসায় তাকে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ।

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে ভাড়া বাসার মালিক ওই গৃহকর্মীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশের জিম্মায় দিয়েছেন। ওই গৃহকর্মী গারো সম্প্রদায়ের। তার বাড়ি নেত্রকোনায়।

এই ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তকে বাড়ি কিংবা অফিসে কোথাও পাওয়া যায়নি। অপর্ণা কুবি মধ্যপাড়া শাখা ব্র্যাকের প্রগতি কর্মসূচি সিও পদে কর্মরত আছেন। তার বাড়ি নেত্রকোনার সুসং দূর্গাপুর বিরিশিরি গ্রামে।

জানা গেছে, তিন বছর আগে মধ্যপাড়া ব্র্যাকে যোগ দেন তিনি। অফিসের সঙ্গেই একটি বাসায় ভাড়ায় থাকেন। দুই বছর আগে ওই শিশুকে গৃহকর্মী হিসেবে আনেন তিনি। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় তার ওপর নির্যাতন চালান। মঙ্গলবার দুপুর ৩টায় ফের নির্যাতন চালালে বাড়ি মালিকের বাড়ি আশ্রয় নেয় ওই গৃহকর্মী। পরে বাড়ির মালিকের মেয়ে তাকে উদ্ধার করে মধ্যপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে জানান। পুলিশ এসে তাকে নিজেদের জিম্মায় নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন থেকেই সামান্য ভুলে মারধর করতেন গৃহকর্মী। ফলে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি।

বাসার মালিকের মেয়ে সুমি বলেন, প্রায় সময় এই গৃহকর্মীকে মারধর করতেন অপর্ণা কুবি। মাঝেমধ্যেই কান্নাকাটি করে আমাদের কাছে ছুটে আসতো। বলতো আমাকে গাড়িতে তুলে দেন আমি বাড়ি যাবো। মঙ্গলবার বিকালে আবারও নির্যাতন করেন। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করে মধ্যপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির জিম্মায় দিয়েছি। এরপর থেকে অপর্ণার খোঁজ মেলেনি। বাসায় ও অফিসে তালা।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অপর্ণা কুবির মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া হলে এক নারী রিসিভ করে বলেন, ‘এটি অপর্ণার নম্বর না। এটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং এখানে কেউ চাকরি করে না।’ তবে তিনি নাম জানাতে অস্বীকার করেন।

পার্বতীপুর থানার অধীন মধ্যপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ বলেন, ‘ওই গৃহকর্মীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার আমাদের কাছে দেওয়া হয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং তার বাবা-মাকে খবর দেওয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে ব্র্যাকের ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটর (বিডিসি) অমল কুমার দাম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের অফিস সংশ্লিষ্ট না হলেও নির্যাতনের বিষয়টি জেনেছি। প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার জন্য প্রধান কার্যালয়ে জানানো হয়েছে। ওই গৃহকর্মীর পরিবার চাইলে তাকে চিকিৎসা সহায়তাসহ আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।’