নীলফামারীতে অকটেন পাওয়া গেলেও মেলেনি পেট্রোল 

 

নীলফামারীতে পেট্রোল ও অকটেনের সংকট কাটেনি। গত রবিবার (৮ মে) সকালে জেলার ফিলিং স্টেশনগুলোতে অকটেন-পেট্রোল সামান্য কিছু সরবরাহ করা হলেও চাহিদার তুলনায় তা ছিল একেবারেই কম। আবার অনেক জায়গায় বাঘাবাড়ী থেকে বরাদ্দ পাওয়া অকটেন এসে পৌঁছালেও, এখনও মেলেনি পেট্রোল। এ অবস্থায় পেট্রোলের চাহিদা অকটেন দিয়ে মেটানোয় ফের সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ মে) বিকালে জেলা শহরের পুলিশ লাইন্স এলাকার রশিদা ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. সহিদুল্যা বলেন, ‘প্রায় এক মাস ধরে পেট্রোল সরবরাহ ছিল না। এতে করে মজুত শেষে দুই দিন বসে থাকার পর গত রবিবার সাড়ে চার হাজার লিটার অকটেন সরবরাহ পাই পাবর্তীপুর ডিপো থেকে। পেট্রোলের অভাবে অকটেনের ওপর চাপ বাড়ায় সে মজুতও শেষ। আজ বাঘাবাড়ী ডিপো থেকে সাড়ে চার হাজার লিটার অকটেন এবং সম পরিমাণ পেট্রোল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সেটি পরিবহনে একটা সময় লাগবে। পরিবহনে কোনও ধরণের সমস্যা হলে আবারও পেট্রোল-অকটেন শূন্য হয়ে পড়বে ফিলিং স্টেশন।’

ফিলিং স্টেশনটি মোটরসাইকেলে পেট্রোল নিতে এসেছিলেন সাহাবুল ইসলাম (২২) নামের এক যুবক। পেট্রোল না পেয়ে প্রয়োজনের তাগিদে অকটেন নেন তিনি। সাহাবুল বলেন,‘ঈদের আগে মোটরসাইকেলে সাড়ে তিন লিটার পেট্রোল নিয়েছিলাম। এর মধ্যে আর প্রয়োজন হয়নি। আজকে এসে দেখি পেট্রোল নেই। নিরুপায় হয়ে অকটেন নিতে হলো।’

একই দিন বিকালে শহরের বাড়িয়ারমোড় এলাকায় মুক্তা ফিলিং স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, পেট্রোল এবং অকটেনের মজুত কম থাকায় দেড়শ’ টাকার বেশি তেল দেওয়া হচ্ছে না। 

ফিলিং স্টেশনটির ব্যবস্থাপক জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘রবিবার যে টুকু অকটেন-পেট্রোল সরবরাহ পেয়েছি, তা দিয়ে দুই দিন চলেছে। আজ মজুত কম থাকায় চাহিদার তুলনায় কম দেওয়া হচ্ছে। দ্রুত বরাদ্দ পাওয়া না গেলে বুধবার থেকে আবারও স্টেশনটি পেট্রোল-অকটেন শূন্য হয়ে পড়বে।’

একই এলাকার দেওয়ান ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক মৃণাল কান্তি রায় বলেন, ‘রবিবার আড়াই হাজার লিটার পেট্রোল এবং তিন হাজার লিটার অকটেন সরবরাহ পেয়েছি। মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত সে মজুত প্রায় শেষের দিকে। দ্রুত  বরাদ্দ পাওয়া না গেলে স্টেশন বন্ধ করতে হবে।’

ফিলিং স্টেশনটিতে প্রতিদিন এক হাজার ৭০০ লিটার পেট্রোল এবং এক হাজার ৩০০ লিটার অকটেনের প্রয়োজন হয় বলে জানান তিনি। 

জেলা পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আকতার হোসেন স্বপন বলেন, ‘ইতোমধ্যে পেট্রোল-অকটেন ফিলিং স্টেশনগুলোতে এসে পৌঁছেছে। যা দিয়ে জেলার সব ফিলিং স্টেশন সচল আছে। পর্যায়ক্রমে আরও বরাদ্দ আসবে।’

তিনি বলেন, জেলার ৩৬টি ফিলিং স্টেশনে প্রতিদিন ৭০ হাজার লিটার পেট্রোল ও ২৫ হাজার লিটার অকটেন প্রয়োজন হয়।

পদ্মা ওয়েল লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. হারিছ আহমেদ সরকার বলেন, ‘গত রবিবার থেকে আমরা বিতরণ অব্যাহত রেখেছি। আশা করি, বুধবারও সকাল থেকে নীলফামারীসহ উত্তরাঞ্চলের সব ফিলিং স্টেশনে চাহিদা মাফিক পেট্রোল-অকটেন সরবরাহ করা যাবে।’

এদিকে, পার্বতীপুর ডিপোর ইনচার্জ এমরানুল হক বলেন, ‘গত রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিন লাখ ৩৫ হাজার লিটার করে অকটেন এবং পেট্রোল ডিপোতে এসেছে। যা থেকে ইতোমধ্যে ৯০ শতাংশ বিতরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে আরও দুই লাখ করে পেট্রোল-অকটেন এসে পৌঁছাবে। সে তেল বুধবার সকাল থেকে বিতরণ করা হবে।’