নীলফামারীতে বিনা টিকিটে পার্কে প্রবেশ, মারধরে হাসপাতালে শিক্ষার্থী 



নীলফামারী সদরে ইটাখোলা ইউনিয়নের দরবেশ পাড়ার ‘বাগান বাড়ি’ নামক পার্কে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিয়াম হোসেন (১৫) নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ওই শিক্ষার্থী জেলা শহরের কালিবাড়ী এলাকার মৃত ফরহাদ হোসেনের ছেলে। সে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে পার্ক কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার (৮ মে) বিকালে জেলা শহরের এর আর ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিয়াম হোসেন ও তার কয়েকজন সহপাঠী ওই পার্কে বেড়াতে যায়। সহপাঠীরা টিকেট করে প্রবেশ করলেও টাকা না থাকায় সিয়াম পার্কের পেছন দিক দিয়ে বেড়া টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় ধরা পড়লে নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে মারপিট করেন। পরে পার্কের মালিক মো. মাহমুদ আরেফিন চৌধুরীও তার ওপর নির্যাতন চালান।

শিক্ষার্থী সিয়ামের  মা আফিয়া আক্তার সদর থানায় এটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ‘বিনা টিকিটে প্রবেশের অপরাধে প্রথমে নিরাপত্তাকর্মীরা সিয়ামকে মারপিট করেন। পরে পার্কের মালিক একটি ঘরে নিয়ে আবারও তাকে নির্যাতন করেন। এ সময় আমার ছেলেকে গোমুত্র ও ওষুধ মেশানো পানি খাইয়ে নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে, তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করি।’

থানার পাশাপাশি বিচার চেয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছেও অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান আফিয়া আক্তার। 

এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার (১০ মে) রাতে পার্কের মালিক  মো. মাহমুদ আরেফিন চৌধুরীর মোবাইলফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে ‘বাগান বাড়ি’ পার্কে গিয়ে কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, মাহমুদ আরেফিন চৌধুরী মঙ্গলবার সকাল থেকে পার্কে আসেননি। সকাল থেকে তার ফোনও বন্ধ আছে।

পার্কের কর্মচারী মো. মিঠু ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার দিন সিয়াম তার কয়েকজন বন্ধুসহ পার্কে বেড়াতে আসে। তার অন্য বন্ধুরা টিকিট কেটে প্রবেশ করলেও সিয়াম বেড়া টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। এর পর পার্কে আসা মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। মেয়েরা অভিযোগ করলে পার্কের মালিক প্রথমে তাদের সতর্ক করেন। এতে তারা মালিক কর্মচারীদের ওপর চড়াও হলে সিয়ামকে আটক করা হয়। এ সময় তার অন্য বন্ধুরা পালিয়ে যায়। পরে পার্কের মালিক তাকে কয়েকটি চড়-থাপ্পর দিয়ে ছেড়ে দেন। তাকে গোমুত্র বা অন্য কিছু খাওয়ানোর অভিযোগ সত্য না।’

নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আব্দুর রহিম বলেন, ওই শিক্ষার্থীর শরীরে তেমন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে তাকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর লক্ষণ দেখা গেছে। বর্তমানে সে সুস্থ আছে।

নীলফামারী সদর থানার ওসি মো. আব্দুর রউপ বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।