ট্রেনের শৌচাগারে পড়ে ছিল বীর মুক্তিযোদ্ধার লাশ

পঞ্চগড়গামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের শৌচাগার থেকে আব্দুল আজিজ শেখ (৭৪) নামে বিজিবির অবসরপ্রাপ্ত এক বীর মুক্তিযোদ্ধার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৭ মে) পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেল স্টেশনে ওই ট্রেনের বগির শৌচাগার থেকে তার লাশটি উদ্ধার করা হয়। সোমবার রাতে পঞ্চগড়গামী ওই ট্রেনে করে দিনাজপুরের ফুলবাড়ি যাচ্ছিলেন তিনি।

তার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানার লক্ষণদিয়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আমীর উদ্দিন শেখের ছেলে। তবে একসময় তিনি দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলার রাজারামপুর এলাকায় বসবাস করতেন।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটি পঞ্চগড় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশনে আসার পর শৌচাগারে কর্মচারীরা এক ব্যক্তির লাশ দেখতে পান। বিষয়টি রেল পুলিশকে জানান। রেল পুলিশ পঞ্চগড় থানা পুলিশকে খবর দেয়। বিজিবির সহযোগিতায় পঞ্চগড় থানা পুলিশ ওই মুক্তিযোদ্ধার লাশ উদ্ধার করেন। পরে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা দুটি ব্যাগ, মোবাইল ফোন, সাড়ে আট হাজার টাকা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং একটি চেক বই উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধারের পর পরিবারকে খরব দেওয়া হয়। কীভাবে মৃত্যু হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে কেউ বলতে পারেননি। তবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করছে রেল পুলিশ।

তার ছেলে রাশেদ শেখ মিঠু মোবাইল ফোনে বলেন, ‘তিনি বাসা থেকে অসুস্থ ছোট ভাইকে দেখতে ঢাকায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা সংক্রান্ত কাজে দিনাজপুরের ফুলবাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। আমার বোন জামাইয়ের মাধ্যমে স্থানীয় বিজিবিকে বাবার বিষয়টি জানিয়েছিলাম। পরে শুনেছি বাবা মারা গেছেন।’

পঞ্চগড় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেল স্টেশনের মাস্টার মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘ট্রেনটি পরিষ্কার করার জন্য ওয়াশ ফিডে নেওয়া হলে সেখানে পরিচ্ছন্নকর্মীরা শৌচাগারে ওই ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখে আমাদের জানায়। পরে রেল পুলিশ ও পঞ্চগড় থানা পুলিশকে জানাই।’

দিনাজপুর রেল পুলিশের (জিআরপি) ওসি মো. এরশাদুল হক ভূঁইয়া জানান, তিনি স্টেশন মাস্টারের মাধ্যমে খবর পেয়েছেন। বিষয়টি পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশকে জানিয়েছেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে বলে তিনি প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন।

পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের ওসি আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, ‘এটা রেল পুলিশের তদন্তের বিষয়। তার সঙ্গে থাকা কাগজপত্র দেখে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহতের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’