শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, সমঝোতায় তৎপর প্রভাবশালীরা

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী এক শিশুকে (৯) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে অষ্টম শ্রেণির এক কিশোরের (১৪) বিরুদ্ধে। শুক্রবার (২৭ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার রমনা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পাত্রখাতা এলাকার মাঝিপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে শিশুটির পরিবার। ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় প্রভাবশালীরা জোর তৎপরতা শুরু করেছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবার জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী ওই কিশোর খেলার কথা বলে শিশুটিকে ডেকে নিয়ে ‘ধর্ষণ’ করে। পরে রক্তক্ষরণের কারণে শিশুটি অসুস্থ হয়ে কান্নাকাটি শুরু করলে অভিযুক্ত কিশোর পালিয়ে যায়। পরিবারের লোকজন শিশুটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় বিশ্বজিৎ নামে স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসককে বাড়িতে ডেকে শিশুটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করে পরিবার। অবস্থা গুরুতর দেখে ওই চিকিৎসক শিশুটিকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।

এদিকে, ভুক্তভোগী শিশু ও অভিযুক্ত কিশোরের পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, ঘটনার পরপরই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও রমনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লাল মিয়া ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারকে ঘটনাটি মীমাংসার পরামর্শ দেন। উভয় পরিবারকে নিয়ে তিনি ঘটনাটি সমাধান করে দেবেন বলেও জানান।

ভুক্তভোগী শিশুর ভাই জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা লাল মিয়া বিষয়টি মীমাংসা করে নিতে বলেছেন। তারাও চান বিষয়টি মীমাংসা হোক। এ নিয়ে তারা কোনও ঝামেলা বাড়াতে চান না বলেও জানান তিনি।

অভিযুক্ত কিশোরের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ওই কিশোরের মা তার ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, ‘একটা ঘটনা ঘটে গেছে। আমরা দুই পরিবার মিলে এটা সমাধান করে নেবো।’

রমনা ইউনিয়নের পল্লী চিকিৎসক বিশ্বজিৎ বলেন, ‘শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে আমাকে ভুক্তভোগী শিশুর পরিবার ডেকে নিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে আমার কাছে এটি ধর্ষণ মনে হওয়ায় আমি কোনও ধরনের চিকিৎসা না দিয়ে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিয়ে চলে আসি।’

তবে ‘ধর্ষণের’ ঘটনা সমাধান করে দেওয়ার কোনও নির্দেশনা দেননি বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা লাল মিয়া। তিনি বলেন, ‘শনিবার সকালে একপক্ষ থেকে ফোন পেয়ে বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ নিয়ে এখনও কারও সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। আমি রৌমারীতে আছি। রৌমারী থেকে ফিরে বিষয়টি জানার পর করণীয় ঠিক করা যাবে।’

চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের কোনও অভিযোগ পাইনি। বিষয়টির খোঁজ নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’