রংপুরে চালের দাম এখনও কমেনি

দেশের উত্তরাঞ্চল এখন আর মঙ্গাপীড়িত এলাকা নয়। এখানকার উদ্বৃত্ত শস্য দেশের খাদ্য মজুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তবে অন্যতম খাদ্য উদ্বৃত্ত এলাকা বলে পরিচিত রংপুরে ভরা মৌসুমেও চালের দাম কমেনি। উল্টো বিভিন্ন জাতের চালে কেজিপ্রতি বেড়েছে ৪ থেকে ৮ টাকা। এ অবস্থায় মজুতদার সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছিল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। তবে অঘোষিতভাবে তা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।  

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরও অভিযান আপাতত বন্ধ রাখার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তবে লোকবলের অভাবে অভিযান বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। 

সরেজমিন দেশের অন্যতম বৃহৎ চালের মোকাম রংপুর সিটি বাজার ও মাহিগঞ্জ মোকাম ঘুরে দেখা গেছে, মোটা জাতের ৪০ টাকার চাল কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে ৪৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশি স্বর্ণা চাল ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও, এখন কেজি প্রতি ৬ টাকা বেড়ে ৫৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। 

এছাড়া ৬০ টাকা দরের মিনিকেট চাল কেজিপ্রতি ৮ টাকা বেড়ে এখন ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর বিআর-২৮ জাতের ৫৪ টাকা কেজি দরের চাল ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে আড়তদাররা মিলারদের দোষারোপ করছেন। আড়তদাররা বলছেন দিনাজপুর, নওগাঁসহ বিভাগের অটোমেটিক রাইস মিলের বড় বড় মিলাররা হাজার হাজার বস্তা চাল গুদামজাত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছেন। এতে চালের দাম বেড়েছে। 

তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের অভিযানে সিটি বাজার ও মাহিগঞ্জ মোকামে ব্যবসায়ীদের গুদামে হাজার হাজার বস্তা চাল অবৈধভাবে মজুতের চিত্র উঠে এসেছে। 

এদিকে ১৫ দিন আগে চালের যে দাম ছিল, তা রাতারাতি কেজিপ্রতি ৬ থেকে ১০ টাকা বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে মাহিগঞ্জ ও সিটি বাজারের আড়তদাররা কোনও উত্তর দিতে পারেননি।  

স্থানীয় খুচরা বিক্রেতারা অভিযোগ করেন, চালের বাজারের অভিযান শুরুর পর মনে হয়েছিল দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে। তবে মাহিগঞ্জের ২-৩টি ব্যবসায়ীর গুদামে অভিযান চালিয়ে ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা আর নগরীর সিটি বাজারের এক দোকানে অভিযান চালিয়ে ৩০ হাজার টাকা জরিমানার পর অভিযান বন্ধ হয়ে গেছে। এই ফাঁকে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা নিজেদের গুদামে সংরক্ষিত চাল অন্য জায়গায় সরিয়ে ফেলেছে। এ কারণে চালের দাম কমছে না বলে অভিযোগ খুচরা ব্যবসায়ীদের। 

এদিকে চালের বাজারে অভিযান বন্ধের বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাদের কয়েকজন কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ নিতে বাইরে অবস্থান করছেন। এ কারণে জনবল সংকটে অভিযান আপাতত বন্ধ আছে। 

তবে সংস্থাটির রংপুরের সহকারী পরিচালক আফসানা পারভীন দাবি করেছেন, তাদের অভিযান বন্ধ হয়নি। কয়েকদিনের জন্য স্থগিত আছে। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান আবারও শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।