আর মাত্র দুই দিন পর মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। পশু কোরবানির জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে এখন ছুরি, চাকু ও দা-বটি। এ জন্য কামারপাড়ায় বেড়েছে উত্তাপ, বেড়েছে ভিড়। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন কামারপাড়ার কর্মীরা। কয়লায় লোহা পুড়িয়ে তাতে হাতুড়ি পিটিয়ে ক্রেতাদের চাহিদামতো পণ্য সরবরাহ করছেন তারা। হিলির কামাররা বলছেন গতবারের চেয়ে কাজের বেশি অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে, এতে তারা বেশ খুশি।
কামারের নিকট চাকু বানাতে আসা সিদ্দিক হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কোরবানির ঈদের আর মাত্র তিন দিন বাকি। এ কারণে পশু কোরবানি দিতে চাকু, ছুরি, দা ও বটি ধার করতে হবে। এজন্য কামারপাড়ায় এসেছি। বাড়িতেই পশু কোরবানির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ রয়েছে, সেগুলো ধার করে নিতে আসা। এছাড়া এবারে এসব জিনিসের দাম বেশি, যে কারণে দুই-একটি জিনিসের প্রয়োজন হলেও না কিনে পুরনোগুলো ধার করিয়ে নিচ্ছি। আমার মতো অনেকেই একই কাজ করছেন। তারাও তাদের পুরনো জিনিসপত্রগুলো ধার করে কাজ সারছেন।
হিলি বাজারের কৃষ্ণ কর্মকার নামের এক কামার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গতবছর করোনার কারণে সেভাবে মানুষজন পশু কোরবানি দিতে পারেননি। আমাদেরও কাজ কম ছিল। এবারে করোনা পরিস্থিতি অনেকটা ভালো হওয়ায় কোরবানির সংখ্যা বাড়বে। তাই আমাদেরও কাজের চাপ বেড়েছে। তবে এবার লোহার দাম বেশি হওয়ায় মানুষজন নতুন কাটাকাটির সরঞ্জামের বিক্রি কম। আগের জিনিসপত্র দিয়েই সবাই কাজ চালাতে চাইছেন।
তিনি আরও বলেন, আগে বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও হোটেলে খড়ি পুড়িয়ে রান্না হতো। তাই কম দামে কয়লা কেনা যেতো। এখন সবাই গ্যাসে রান্না করায় কয়লা তেমন পাওয়া যায় না। এদিকে মৌসুম শুরু হওয়ায় চাহিদা বাড়ায় দোকানিরা কয়লার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। গতবছর যে কয়লা প্রতি ডালি ৩০/৪০টাকা কিনেছি, এবার সেই কয়লা ৬০ টাকা করে নিচ্ছে। যে কারণে দা, চাকু-ছুরির ধার দিতে মজুরি বেড়েছে।
হাকিমপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশীদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কামারসহ এই ধরনের পেশাগুলো যেন বিলুপ্ত না হয়, সে জন্য প্রধানমন্ত্রী তাদের তালিকা সংগ্রহ করছেন। তারা যেন সুন্দরভাবে এই পেশায় থেকে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে, সেজন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করবেন। একইসঙ্গে যারা জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বে রয়েছি, আমাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।