রংপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে নেই রাজনৈতিক দল

রংপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে ঈদ উদযাপনে সহায়তা নিয়ে কোনও রাজনৈতিক দল দাঁড়ায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৩০ হাজার পরিবারের সদস্যদের এবার ঈদে কোনও উদযাপন ছিল না। অনাহারে অর্ধাহারে কেটেছে তাদের ঈদ। 

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধীদল বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পশু কোরবানি বা মাংস বিতরণের বিষয়ে কোনও কর্মসূচি তাদের ছিল না। 

অন্যদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ জীবিতকালে দলের দুস্থ নেতাকর্মী ও সহায় সম্বলহীন পরিবারের জন্য গরু কোরবানি দিয়ে মাংস বিলি করলেও এবার এমপি সাদ এরশাদের দেওয়া কোরবানির গরুর মাংস পাননি বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন ইউনিয়নের লোকজন।

রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহাম্মেদ বলেন, কোরবানি ঈদ উপলক্ষে দুস্থ মানুষের মাঝে মাংস বিতরণ বা দলীয় কার্যালয়ে কোরবানি দেওয়ার ব্যবস্থা এবার ছিল না। তবে দলের  নেতারা তাদের নিজ বাড়িতে কোরবানির পশুর মাংস বিতরণ করেছেন। 

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও একই কথা বলেন। দলীয়ভাবে কোরবানি করা ও দুস্থদের মধ্যে মাংস বিতরণের কোনও কর্মসূচি নেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি। 

তবে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আসিফের উদ্যোগে দলের দুস্থ নেতাকর্মীদের মধ্যে কোরবানির মাংস বিতরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। আসিফ জানান, দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কোরবানির মাংস বিতরণ করা হয়েছে। 

অন্যদিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান লাকুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এবার পর পর তিন দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারসহ দুস্থ মানুষের মধ্যে ঈদের আগে বা ঈদের দিন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ বা কোরবানির মাংস বিতরণের কোনও কর্মসূচি ছিল না। একই তথ্য জানান, জেলা যুবদলের সভাপতি নাজু।

এ বিষয়ে জানতে রংপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক শামসুজ্জামান শামুর সঙ্গে বেশ কয়েকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। 

এদিকে জাতীয় পার্টির দুর্গ বলে পরিচিত রংপুরে এবার জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে দলের নেতাকর্মীদের জন্য কোনও কোরবানির আয়েঅজন ছিল না। এমনকি তিন দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাজার হাজার পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের কোনও পদক্ষেপও নেওয়া হয়নি। 

এ বিষয়ে রংপুর মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির আহাম্মেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দলীয়ভাবে কোনও ত্রাণ বিতরণ ও মাংস বিতরণের কোনও কর্মসূচি ছিল না। তবে রংপুর সদর ৩ আসনের জাপা দলীয় সাংসদ সাদ এরশাদ এমপির কোটা থেকে পাওয়া প্রকল্পের অর্থ দিয়ে ৮টি ইউনিয়নে কোরবানির গরু কেনার অর্থ দিয়েছিলেন। সেই অর্থ দিয়ে দলীয় কার্যালয়ে দুটি গরু কোরবানি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

তবে ওইসব ইউনিয়নের অসহায় পরিবারগুলো বলছেন কোনও মাংস তারা পাননি। 

এদিকে তিন দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য ঈদ উপলক্ষে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর কোনও কর্মসূচি না থাকাকে দুঃখজনক বলছেন জেলার সিপিবি সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদত হোসেন ও বাসদ জেলা সমন্বয়ক আব্দুল কুদ্দুস।