কেন চাল আনছেন না ব্যবসায়ীরা  

দেশের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মূল্য নিয়ন্ত্রণে আমদানি শুল্কও কমিয়েছে সরকার। অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে চাল আমদানি শুরু করেছেন। তবে ডলারের বিপরীতে টাকার মান ওঠানামা, ভারতের ব্যবসায়ীদের চালের দাম বাড়িয়ে দেওয়া এবং এলসিতে ব্যাংকগুলোর মার্জিন রেট কমিয়ে দেওয়ায় চাল আমদানিতে আগ্রহ নেই বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। 

জানা যায়, আমদানির অনুমতি পাওয়ার পর শনিবার (২৩ জুলাই) বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়। এদিন থেকে শুরু করে সোমবার (২৫ জুলাই) পর্যন্ত তিন দিনে ১০ ট্রাকে ৩৩৫ টন চাল আমদানি হয়েছে। এর আগে চালের আমদানি শুল্ক বাড়তি থাকায় গত বছরের ৩১ অক্টোবর থেকে হিলি বন্দর দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ ছিল।

হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কৃষকের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে সরকার চাল আমদানিতে শুল্ক ৬২.৫ ভাগ নির্ধারণ করে। এতে লাভ কম হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে ভারত থেকে চাল আমদানি বন্ধ ছিল। সম্প্রতি বাজারে দেশি চালের সরবরাহ কমায় দাম ঊর্ধ্বমুখী হলে আমদানি শুল্ক কমিয়ে ২৫ ভাগ নির্ধারণ করে সরকার। সেই সঙ্গে বেসরকারি পর্যায়ে সারা দেশের বেশ কয়েকজন আমদানিকারককে কয়েক লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়।’

তবে চাল আমদানিতে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যবসায়ীরা এলসি খুলে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু করেছেন। বর্তমানে আতপ চাল ৩০০ মার্কিন ডলার মূল্যে এবং সিদ্ধ চাল ৪০০ থেকে ৪২০ মার্কিন ডলার মূল্যে আমদানি হচ্ছে। প্রতি কেজি চালে শুল্ক বাবদ ১০ টাকার মতো পরিশোধ করতে হচ্ছে। স্বর্ণা জাতের চাল আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক পরিশোধ করে বিক্রি করতে হয় ৪৭ টাকা কেজি আর দেশি স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি দরে। এতে দাম বেশি পড়ায় সেভাবে চাল আমদানি হচ্ছে না। অন্যদিকে আমদানির অনুমতি দেওয়ার খবরে ভারতের ব্যবসায়ীরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এছাড়া আমাদের দেশে ডলারের মূল্য প্রতিনিয়ত ওঠানামা করছে। এখন যে দামে এলসি খোলা হচ্ছে বিল পরিশোধের সময় ডলার রেট বাড়তি হওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে– এটিও চাল আমদানি কমের একটি কারণ। এছাড়া ব্যাংক এলসির মার্জিন কমিয়ে দিয়েছে। আগে ১০ ভাগ মার্জিনে এলসি দিলেও বর্তমানে ৫০ থেকে ৭০ ভাগ মার্জিনে দিচ্ছে। ফলে চাল আমদানি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না আমদানিকারকরা।’ 

আমদানি শুল্ক আরও কিছুটা কমানো হলে চাল আমদানি বাড়বে বলে মনে করেন তিনি। 

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘২৩ জুলাই থেকে বন্দর দিয়ে চাল আমদানি হলেও আমদানিতে তেমন গতি নেই। গত শনিবার বন্দর দিয়ে ৭৪ টন সিদ্ধ এবং ৩৪ টন আতপ চাল আমদানি হয়েছে। রবিবার ১০৮ টন সিদ্ধ এবং ৭৯ টন আতপ চাল আমদানি হয়। এছাড়া সোমবার ৪০ টন চাল আমদানি হয়েছে।’