সন্তানসম্ভবা কিশোরীকে হত্যা, কথিত প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার জলসিংপুর বাউড়াকোর্ট গ্রামে ১৬ বছর বয়সী কিশোরীকে বিয়ের কথা বলে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে হত্যার ঘটনায় আসামি নাহিদ হাসানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রবিবার (৭ আগস্ট) বিকালে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক তারিক হোসেন এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল। পরে তাকে কঠোর পুলিশি নিরাপত্তায় আদালতের হাজত খানায় নেয়া হয়। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, মিঠাপুকুর উপজেলার ডলসিংপুর বাউড়া কোর্ট গ্রামের এক কিশোরীর সঙ্গে একই গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে নাহিদ হাসানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের এক পর্যায়ে কিশোরী সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন। বিষয়টি জানাজানি হলে কিশোরীর পরিবার নাহিদ হাসানকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। তবে সে এতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে ২০২১ সালের ২২ এপ্রিল নাহিদ কিশোরীকে মোবাইলফোনে কল দিয়ে ডেকে আনে। এরপর বাড়ির অদূরে একটি ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে শ্বাসরোধে কিশোরীকে হত্যা করে। দু’দিন পর লাশ ভুট্টা ক্ষেতে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। পরে পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় নাহিদ হাসানকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে নাহিদ হত্যার কথা স্বীকার করে। আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। মামলায় ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে বিচারক নাহিদ হাসানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেন।

আদালতের অতিরিক্ত পিপি নয়নুর রহমান টফি বলেন, আমরা বাদী পক্ষে মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আসামি যে অপরাধ করেছে, এ জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি আশা করেছিলাম। বিচারক তাই দিয়েছেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুল হক প্রামাণিক বলেন, আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।