বেড়েছে দাম, কমেছে পাথর আমদানি

বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পাথরের দাম বাড়িয়েছেন। এতে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি কমেছে। বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা ও বিভিন্ন প্রকল্পে পাথর সরবরাহকারী ব্যবসায়ীরা।

স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে ভারত থেকে বোল্ডার পাথর ও চিপস পাথর আমদানি অব্যাহত আছে। তবে দাম বাড়তি। ৫/৮ ও ৩/৪ সাইজের প্রতি টন পাথর চার হাজার ৬৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। হাফ ইঞ্চি সাইজের পাথরের টন তিন হাজার ৭০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এসব পাথর এক সপ্তাহ আগে দেড় থেকে ২০০ টাকা কমে বিক্রি হয়েছিল। দাম বাড়ায় পাথর বেচাকেনা কমেছে বলে জানিয়েছেন বন্দরের ব্যবসায়ীরা।

বন্দরে পাথর কিনতে আসা মিরাজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‌‘রংপুরের পীরগঞ্জে সরকারি প্রকল্পের কাজের জন্য পাথর কিনতে এসেছি। গত সপ্তাহে চার হাজার ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা টন কিনেছি। এখন চার হাজার ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কিনতে হচ্ছে। দুদিন আগেও একই দাম ছিল। দুদিনের ব্যবধানে দাম বেড়ে গেলো। দাম বাড়ায় খরচ বেড়েছে। সেইসঙ্গে তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ বেড়েছে। নির্মাণকাজে এসবের প্রভাব পড়বে।’

স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ কেটে যাওয়ায় দেশে সড়ক, কালভার্ট ও সেতুসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ বেড়েছে। এজন্য পাথরের চাহিদা বেড়েছে। চাহিদাকে পুঁজি করে সিন্ডিকেট করেছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। তারা দাম বাড়িয়েছেন। এজন্য দেশের বাজারে পাথরের দাম বেড়েছে। সিন্ডিকেটের কাছ থেকে আমাদেরকে পাথর আমদানি করতে হয়। যদি ভারতে সিন্ডিকেটমুক্ত করা যায়, তাহলে দাম কমবে। পাশাপাশি প্রচুর পাথর আমদানি করা সম্ভব হবে।’

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানি কমেছে

পাথর আমদানিকারক শাহিনুর রেজা বলেন, ‘সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর অর্ধেকের বেশিতে পাথর ব্যবহার হচ্ছে। এজন্য সবসময় পাথরের চাহিদা বেশি। কিন্তু হঠাৎ সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়েছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। এজন্য আমদানির পরিমাণ কমেছে। ভারতের পাকুর ও ঝাড়খণ্ড থেকে পাথরের ট্রাক লোড দিলেও সরাসরি ঢুকতে দেয় না তারা। সিন্ডিকেট করে ট্রাকগুলো আটকে রেখে তাদের নিজস্ব ডাম্পে আনলোড করার পর দাম বাড়িয়ে নিচ্ছেন। বারবার রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানকে পত্র দিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করে জানিয়েছি বিষয়টি। আমরা যারা বিভিন্ন প্রকল্পে পাথর সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছি, বাড়তি দামের কারণে দিতে পারছি না।’

স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পাথর আমদানি অব্যাহত আছে। তবে আগে ১০০ ট্রাকের বেশি আমদানি হতো। মাঝখানে তা কমে ২০-২৫ ট্রাকে নেমেছিল। বর্তমানে কিছুটা বেড়ে ৪০-৫০ ট্রাকে দাঁড়িয়েছে। তবে দাম বেড়েছে। পাথর আমদানির ফলে রাজস্ব যেমন বেড়েছে তেমনি বন্দর কর্তৃপক্ষের দৈনন্দিন আয় বেড়েছে। আমদানি নির্বিঘ্ন রাখতে বন্দরের ভেতরে আলাদা জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। আমদানিকারকরা যাতে দ্রুত খালাস নিতে পারেন সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত জুলাই মাসে ৪৩ হাজার ৬২৩ টন টন পাথর আমদানি হয়েছে; যা থেকে রাজস্ব এসেছে তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা।’